পাতা:বৌদ্ধ-ভারত.djvu/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২
বৌদ্ধ-ভারত

সাধনা গ্রহণ করিয়াছিলেন তাহা কি কেবল বাসনা-বিলোপের সাধনা? বোধি লাভ করিয়া তিনি অমৃতমণ্ড পান করিয়াছিলেন। এই নির্ব্বাণ বা অমৃতলাভের নিমিত্তই তিনি দুঃখের মূলীভূত কারণ এবং তাহার নিবৃত্তির উপায় প্রত্যক্ষ করিয়াছিলেন। তিনি জানিয়াছিলেন,—

 “জিঘচ্ছা পরমা রোগা সঙ্খারা পরমা দুক্‌খা” গৃধ্নুতা পরম রোগ এবং রূপবেদনা-সংজ্ঞা সংস্কার-বিজ্ঞান এই প্রত্যয়জ পদার্থগুলি পরম দুঃখ। দুঃখের তথ্যটি যখন বোধগম্য হয়, তখনই দুঃখের উপশম হয়। ধর্ম্মপদে উক্ত আছে “এতং ঞাত্বা যথাভূতং নিব্বানং পরমং সুখং” এই তত্ত্ব বুঝিয়াই পণ্ডিতেরা পরম সখ লাভ করেন। ধম্মপদ বলেন,—

আরোগ্য পরম লাভা সন্তুট্‌ঠী পরমং ধনং
বিস্‌সাসা পরমা ঞাতী নিব্বানং পরমং সুখং

 “আরোগ্য পরম লাভ, সন্তুষ্টি পরম ধন, বিশ্বাস পরম জ্ঞাতি, নির্ব্বাণ পরম সুখ।”

 বুদ্ধ আপনার জীবনে এই পরম সুখ লাভ করিয়াছিলেন। দুঃখোপশমে তিনি এমন সদাপ্রসন্ন, সৌম্যকান্তি লাভ করিয়াছিলেন যে, তাঁহার মুখশ্রী দেখিয়া দর্শকমাত্রের হৃদয়ই শ্রদ্ধায় অবনত হইত। ঋষিপত্তনে আগমনের সংবাদ পাইয়া তাঁহার পঞ্চশিষ্য পণ করিয়াছিলেন, গৌতমকে কিছুতেই গুরু বলিয়া স্বীকার বা সম্মান করিবেন না; কিন্তু, তাঁহারা তাহা পারিলেন না। তাঁহার মুখকান্তি দেখিয়াই তাঁহাদের মস্তক আপনা-আপনিই অবনত হইয়াছিল। বুদ্ধত্ব লাভের পূর্ব্বে গৌতম যখন একটি মহাভাবের প্রবল প্রেরণায় অন্তহীন উন্মুক্ত পথে ঘুরিয়া বেড়াইতেছিলেন, তখন তাঁহার প্রবল সত্যনিষ্ঠা এই পঞ্চ শিষ্যকে আকর্ষণ করিয়াছিল। নৈরঞ্জনা-তীরে উরুবিল্ব বনে তপশ্চর্য্যার সময়ে তাঁহারা গৌতমের সেবা করিয়াছেন। অতঃপর যখন কৃচ্ছ