পাতা:বৌদ্ধ-ভারত.djvu/২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
বৌদ্ধ-ভারত

জন্মমৃত্যুর রহস্য বুঝিয়াছি। আমি যাহা বুঝিয়াছি তাহাই ভিক্ষুদের ও শ্রাবকদের নিকট প্রচার করিয়াছি।”

 এইখানে যাহা ব্যক্ত হইয়াছে তাহা হইতে স্পষ্টই বোঝা গেল—বুদ্ধ যে ধর্ম্মতথ্য ব্যাখ্যা করিয়াছেন তত্ত্বের দিক দিয়া তাহার মধ্যে তিনি কোনো মৌলিকতারই দাবী করিতে চাহেন না। প্রাচীন সুরায় নূতন পাত্র পূর্ণ করিয়া তিনি ধর্ম্মক্ষেত্রে অবতরণ করিয়াছিলেন। কপিল ও পতঞ্জলি প্রভৃতির প্রাচীন ভারতের দার্শনিক পণ্ডিতগণ মহাপুরুষ বুদ্ধের আবির্ভাবের পূর্ব্বেই তাহাদের দার্শনিক নানা মত সুকৌশলে ব্যক্ত করিয়াছেন। তত্ত্বের দিক দিয়া বুদ্ধ তাহাদেরই পন্থা অনুসরণ করিয়া থাকিবেন। তথাপি তিনি যাহা বলিয়াছেন তাহা অপূর্ধ্ব। পণ্ডিতবর মোক্ষমূলর ধর্ম্ম চক্র-প্রবর্ত্তন সূত্রের ভূমিকায় বলিয়াছেন— “Never in the history of the world had a scheme of salvation been put forth so simple in its nature, so free from any super-human agency,”—“পৃথিবীর ইতিহাসে আর কেহ মুক্তির বাণী এমন সরলভাবে, এমন অতিপ্রাকৃত বর্জ্জন করিয়া বিবৃত করেন নাই।”

 পিটক অবলম্বন করিয়া পণ্ডিতেরা এই মুক্তি বা নির্ব্বাণকে তিনভাবে ব্যাখ্যা করিয়া থাকেন। (১) নির্ব্বাণ——শূন্য, বিনাশ, মহাবিনাশ, অহং বোধের বিলোপ সাধন করিয়া গভীর শূন্যতার মধ্যে নিমজ্জন। (২) নির্ব্বাণ এক পরম রহস্য—স্বয়ং বুদ্ধ ইহার স্বরূপ খোলাখুলি বলেন নাই। (৩) নির্ব্বাণ মানব জীবনের গৌরবময়, সুখকর ও কল্যাণকর পরিণাম। এই সকল বিভিন্ন মতের কোন সমাধান আছে কিনা, তাহার আলোচনা করিবার অধিকার বিশেষজ্ঞ সুধীবর্গেরই আছে সুতরাং সেই আলোচনার দিকে আমরা যাইব না।

 সাধারণ বুদ্ধিতেই ইহা মনে হয় যে, বিশেষ একটি আকর্ষণ ভিন্ন মানুষ কোনোখানে দল বাঁধিতে চায় না। মহাপুরুষ বুদ্ধ যখন