পাতা:বৌদ্ধ-ভারত.djvu/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
বৌদ্ধ-ভারত

ব্যবহারের কদাচ প্রশ্রয় দিতেন না। নিয়ম আছে, সুস্থকায় ভিক্ষুরা পান্থশালায় একবেলামাত্র আহার করিতে পারিবেন। দিবা দ্বিপ্রহরের পরে পিণ্ডগ্রহণ নিষিদ্ধ। দল বাঁধিয়া পাঁচ ছয় জনে কাহারো গৃহে ভিক্ষায় যইবেন না। গৃহী যেমন ভাবে যাহার পরে যাহা খাইতে দিবেন, ভিক্ষুরা তেমনি আহার করিবেন। “আগে ইহা চাই” এমন ভাবে ফরমাস করিতে পারিবেন না। সুস্থকায় ভিক্ষু কখনো মধু নবনীতাদি চাহিয়া খাইতে পারিবেন না। কোন ভিক্ষু ভোজন সমাপ্ত করিবার পরে অন্য কোন ভিক্ষু তাঁহাকে আহার করিবার জন্য অনুরোধ করিতে পারিবেন না। সময়ান্তরে আহার করিবার জন্য ভিক্ষু কোন খাদ্যদ্রব্য সরাইয়া রাখিতে পারিবেন না। কোনো গৃহী ভিক্ষুকে যত খুসী আহার গ্রহণ করিতে অনুরোধ করিলেও, তিনি দুই তিন পাত্রের বেশী লইবেন না। ঐ খাদ্য অন্য ভিক্ষুদের মধ্যে বণ্টন করিয়া দিবেন। কোন ভিক্ষু ভোজবেলায় বলপূর্ব্বক কোন গৃহীর ঘরে প্রবেশ করিবেন না।

 ভিক্ষুরা যেখানে-সেখানে যাকে-তাকে বিনা প্রয়োজনে উপদেশ দিয়া বেড়াইবেন—লোকশ্রেষ্ঠ বুদ্ধের অনুশাসন তেমন হইতেই পারে না। যে ব্যক্তি বিলাসে মগ্ন, উপদেশ পাইবার নিমিত্ত যাহার মনে আগ্রহ জাগিয়া উঠে নাই, অথবা যাহার শ্রদ্ধা নাই, তাহাকে ধর্ম্ম কথা শুনান নিষিদ্ধ। ভিক্ষু কখনো ছত্রধারী, যষ্টিধারী, অস্ত্রধারী পাদুকাপরিহিত, যানারোহী, শায়িত, হেলান দিয়া উপবিষ্ট, উষ্ণীষধারী কিম্বা রোগী ব্যক্তিকে ধর্ম্মোপদেশ দিবেন না। পথিমধ্যে ধর্ম্মকথা শুনান বিধেয় নহে

 ছোট বড় এমন অনেক বিধিনিষেধ বৌদ্ধ ভিক্ষুকে মানিয়া চলিতে হইত। বৌদ্ধ গৃহী বা শ্রাবকেরও প্রতিপাল্য নিয়মের অভাব নাই। বৌদ্ধসাধনা বাসনা বর্জ্জনের সাধনা হইলেও প্রকৃত বৌদ্ধ ঘরে-বাহিরে, বিহারে-জনপদে কোনোখানেই শিষ্টতা, ভদ্রতা ও লৌকিকতা বর্জ্জন করিতে পারেন না। বৈরাগ্যের উচ্চ চূড়ায় আরোহণ করিয়া তিনি যদি সংসারের সাধারণ লোকের সুখ