পাতা:বৌদ্ধ-ভারত.djvu/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তৃতীয় অধ্যায়

বৌদ্ধবিধি ও সঙ্ঘের প্রকৃতি

 ভারতবর্ষের প্রাচীন ইতিহাস একান্ত বিচ্ছিন্ন হইলেও একথা একরূপ সর্ব্ববাদিসম্মত যে, ভারতবর্ষের ঐতিহাসিক যুগের সূচনাকালেই ভগবান্ বুদ্ধ তাঁহার উদার ধর্ম্মদ্বারা আর্য্য ও অনার্য্য দ্বন্দ্বের সমাধান করিবার চেষ্টা পাইয়াছিলেন; অথবা তাঁহার সার্ব্বভৌম ধর্ম্মের পুণ্যপ্রভাব আপনা আপনি বিবাদরত আর্য্য-অনার্য্যদিগের মনোমালিন্য দূর করিতেছিল।

 বদ্ধের ধর্ম্ম ও সঙ্ঘের দিকে দৃষ্টিপাত করিবামাত্র ইহাই সর্ব্বপ্রথমে দেখা যায় যে, ধর্ম্মের মিলন-মন্দিরের চারিদিকে তিনি কৃত্রিম প্রাচীর তুলিয়া বাধার সৃষ্টি করেন নাই। এই জন্য আর্য্য অনার্য্য প্রত্যেকেই বলিতে পারিল “বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি, ধর্ম্মং শরণং গচ্ছামি,” বুদ্ধ, ধর্ম্ম ও সঙ্ঘ জাতিবর্ণনির্ব্বিচারে সকলের আশ্রয় হইল। বুদ্ধের বাণী কেবল উচ্চবর্ণের কতিপয় পণ্ডিতের উপভোগ্য হইল না, সমাজের নিম্নতম শ্রেণীর পতিতেরাও ইহার ভাগ পাইয়াছিল। ফলে এই ধর্ম্মকে আশ্রয় করিয়া প্রাচীন ভারতে যে জাগরণ দেখা গিয়াছিল সেই জাগরণ সাম্প্রদায়িক নহে—উহাতে সকল দেশই জাগিয়া উঠিয়াছিল। সেই জাগরণ শিল্পবিজ্ঞান, সাহিত্যদর্শন, সমাজরাষ্ট্র সব দিকেই সুস্পষ্টরূপে প্রকাশ পাইয়াছিল।

 বুদ্ধ যে মুক্তির বাণী প্রচার করিলেন তাহা অনার্য্যের কর্ণগোচর না হইলে ক্ষৌরকার উপালী ধর্ম্মশাস্ত্রের বক্তা ও ব্যাখ্যাতা হইতে পারিতেন না এবং পতিতা বারাঙ্গনা আম্রপালী ভিক্ষুণীর