আপনাদের সম্মুখে উপস্থিত করিতে পারি।” সঙ্ঘের সম্মতি পাইয়া দীক্ষার্থী যথাযোগ্য বসন পরিধান করিয়া সম্মিলিত ভিক্ষুদের সমীপে যুক্তকরে নিবেদন করিবেন— “মাননীয় ভিক্ষুগণ, আমি উপসম্পদাগ্রহণের ইচ্ছা জানাইতেছি, অনুকম্পা করিয়া আমাকে উপসম্পদা দান করুন।” দীক্ষার্থী তিনবার এইরূপ বিজ্ঞপ্তি করিয়া থাকেন। অতঃপর তাঁহার উপদেষ্টা বলিবেন—“মাননীয় ভিক্ষুগণ, আমার নিবেদন শ্রবণ করুন, অমুক ব্যক্তি অমুক ভিক্ষুর নিকট উপসম্পদাদীক্ষা গ্রহণ করিতে চাহিতেছেন, আপনাদের অনুমতি হইলে আমি দীক্ষার্থীকে এই দীক্ষা গ্রহণের সম্বন্ধে যাহা বাধা আছে একে একে সেইগুলি জিজ্ঞাসা করি।” সঙ্ঘ অনুমতি প্রদান করিলেন; তখন উপদেষ্টা একে একে প্রশ্ন করিলেন।
প্রশ্নোত্তর হইতে ভিক্ষুগণ জানিতে পারিলেন যে, দীক্ষার্থীর কুষ্ঠ, গণ্ড, শ্বেত, শ্বাস কিম্বা অপস্মার প্রভৃতি রোগ নাই; তিনি স্বাধীন এবং অঋণী; তিনি রাজ্যভৃত্য অথবা ক্রীতদাস নহেন; তাঁহার বয়স বিশবৎসর পূর্ণ হইয়াছে এবং গৃহত্যাগের সময়ে তিনি মাতাপিতার অনুমতি পাইয়াছেন।
এইরূপে সঙ্ঘের ভিক্ষুরা যখন দীক্ষার্থীর সম্বন্ধে তাহাদের সকল জ্ঞাতব্য জানিয়া প্রসন্ন হইলেন তখন নবীনভিক্ষু উপসম্পদা প্রাপ্ত হইয়া সঙ্ঘমধ্যে প্রতিষ্ঠালাভ করেন এবং ভিক্ষর পূর্ণ অধিকার লাভে সমর্থ হন।
দীক্ষাগ্রহণের সময়েই নবীন ভিক্ষু সঙ্ঘের সম্মিলিত ভিক্ষুগণের নিকটে প্রণত হইয়া সঙ্ঘকে স্বীকার করিয়া লইয়া থাকেন। বুদ্ধ তাঁহার কাছে যেমন সত্য, ধর্ম্ম তাঁহার কাছে যেমন সত্য, সঙ্ঘ ও তেমনি সত্য।
আড়াই হাজার বৎসর পূর্ব্বে ভারতবর্ষের বৌদ্ধ বিহারে সংসারত্যাগী ভিক্ষুরা গণতন্ত্রতাকে এমন করিয়া সম্মান করিতেন। অধুনা সুসভ্যজাতিসমূহদের মধ্যে যেমন “Voting by ballot” অর্থাৎ ছোট ছোট গোলক বা টিকেট দ্বারা ভোট লইয়া বিচার