লইয়া ইহাদের মধ্যে বিরোধ উপস্থিত হইয়াছিল। দ্রোণ নামক এক ব্রাহ্মণ অস্থি ভাগ করিয়াছিলেন। তিনি সকলের অনুমতিক্রমে যে পাত্রে অস্থি রক্ষিত হইয়াছিল তাহা গ্রহণ করেন। অস্থিবিভাগ শেষ হইবার পরে মৌর্য্যগণ কুশী নগরে আগমন করেন, তাঁহারা দেহধাতু না পাইয়া চিতার অঙ্গার লইয়া যান। এই সকলের দ্বারা উত্তরকালে আটটি শরীরস্তূপ, একটি কুম্ভস্তূপ এবং একটি অঙ্গারস্তূপ নির্ম্মিত হইয়াছিল।
বৌদ্ধধর্ম্মের প্রাদুর্ভাবকালে ভারতবর্ষে অঙ্গ, মগধ, কাশী, কোশল, ভজ্জি, মল্ল, চেদি, বংশ, কুরু, পাঞ্চাল, মৎস্য, সুরসেন, অশ্বক. অবন্তী, গান্ধার, কাম্বোজ এই ষোলটি বৃহৎ রাজ্য ছিল। বৃদ্ধের জীবদ্দশায়ই এই সকলের অধিকাংশ রাজ্যে বৌদ্ধধর্ম্ম প্রচারিত হইতেছিল। বৌদ্ধশাস্ত্র পাঠে ইহা জ্ঞাত হওয়া যায় যে, ভগবান্ বুদ্ধ স্বয়ং, তাঁহার ধর্ম্ম অঙ্গ, মগধ, কাশী, কোশল, ভজ্জি ও মল্ল দেশে প্রচার করিয়াছিলেন!
বুদ্ধের পরিনির্ব্বাণলাভের পরে একবিংশতি দিবসে তাঁহার দেহধাতু বিভক্ত হয়। ঐ দিবস মহাকাশ্যপ ভিক্ষু সংঘে প্রস্তাব করেন— “পঞ্চশত ভিক্ষু রাজগৃহে বর্ষাবাস গ্রহণপূর্ব্বক ধর্ম্ম ও বিনয় সমবেতভাবে আবৃত্তি করুন।” এই প্রস্তাব যথারীতি প্রস্তাবিত ও অনুমোদিত হইল।[১]
বেরভার পর্ব্বতের পার্শ্বে সপ্তপর্ণী গৃহাদ্বারে মগধরাজ অজাতশত্রু এক পরম রমণীয় সভামণ্ডপ নির্ম্মাণ করিয়াছিলেন। এই মণ্ডপের ভিত্তিস্তম্ভ ও সোপান সুবিভক্ত করা হইয়াছিল। নানা প্রকার লতা ও মাল্যদ্বারা মণ্ডপ সুচিত্রিত করা হইয়াছিল।
শ্রাবণ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে এই মহাসঙ্গীতির অধিবেশন আরম্ভ হয়। আনন্দপ্রমুখ পাঁচশত ভিক্ষু উপবিষ্ট হইলে সঙ্ঘস্থবির মহাকাশ্যপ ভিক্ষুগণকে সম্বোধন করিয়া বলিলেন—
- ↑ প্রথম বৌদ্ধমহাসঙ্গীতির বিবরণটী সংহৃদ্বর শ্রীযুক্ত বিধুশেখর শাস্ত্রী মহাশয়ের এক রচনা হইতে সঙ্কলিত হইল।