সন্ন্যাসী যে-কোনো ব্যক্তির ধর্ম্মমতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করিও। আপনার ধর্ম্মমতকে শ্রেষ্ঠত্বদান করিবার জন্য অন্যের ধর্ম্মের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ অসঙ্গত। বাক্যে সংযত হওয়া বিধেয়। (৯) ধর্ম্ম কল্যাণপ্রদ, কিন্তু, ধর্ম্ম কাহাকে বলে? লালসার নিবৃত্তি, অপরের কল্যাণ-সাধন, করুণা, বদান্যতা, সত্যানুরাগ এবং পবিত্রতাই ধর্ম্ম বলিয়া উক্ত হইতে পারে। লোকে স্বকৃত উৎকৃষ্ট কার্য্যের গর্ব্ব করিয়া থাকে কিন্তু, স্বকৃত দুষ্কার্য্যের প্রতি অন্ধ। আত্ম-কল্যাণসাধনের জন্য আত্মপরীক্ষা প্রয়োজনীয়।
রাজনৈতিক কার্য্য পরিচালনার জন্য মৌর্য্যভূপতিদের শাসনকালে প্রাদেশিক শাসনকর্ত্তাদের অধীনে ‘রাজুক’, প্রাদেশিক’, মহাপাত্র’, ‘যুক্ত’, ‘উপযুক্ত’, ‘লেখক’, ‘উপাধিধারী’, এই সকল রাজ কর্ম্মচারী ছিলেন। মৌর্য্যভূপতিদের রাজ্য সুশাসিত, সুগঠিত ছিল এবং মৌর্য্য রাজাদের শাসনকালের বিবরণ যথাবিধি লিপিবদ্ধ করিবার ব্যবস্থা ছিল। মহামতি অশোক তাঁহার রাজত্বের চতুদ্দর্শ বর্ষ হইতে “ধর্ম্মমহাপাত্র”, ‘ধর্ম্মযুক্ত’, উপাধিধারী একদল কর্ম্মচারী নিযুক্ত করিয়াছিলেন। সাম্রাজ্যের জনমণ্ডলী ধর্ম্মবিধি প্রতিপালন করে কিনা ধর্ম্মবিভাগীয় ঐ সকল কর্ম্মচারী তাহাই পরিদর্শন করিতেন। দক্ষিণ ভারতের চোলা, পাণ্ড্য প্রভৃতি কয়টি ক্ষুদ্র রাজ্য ব্যতীত সমগ্র ভারতবর্ষ এমনকি আফগানিস্থান, বেলুচিস্থান, দক্ষিণ হিন্দুকুশ প্রভৃতি রাজ্য সম্রাট অশোকের সাম্রাজ্যভুক্ত ছিল। তিনি তাঁহার এই সুবিস্তৃত রাজ্যের সর্ব্বত্র যেরূপ অসংখ্য স্তূপ, স্তম্ভ ও বিহার স্থাপন করিয়াছিলেন তাহাতে ইহা সুনিশ্চিত যে, অশোকের ধর্ম্মরাজ্যে শান্তি ও শৃঙ্খলা বিরাজ করিত। অশোক-প্রেরিত-ধর্ম্মপ্রচারকগণ এশিয়া ইয়ুরোপ এবং আফ্রিকা এই তিন মহাদেশে গমন করিয়াছিলেন। অশোকের ধর্ম্মপ্রচারের ইতিবৃত্ত পরম বিস্মরকর। বৌদ্ধধর্ম্মের মহোচ্চ আদর্শের প্রতি প্রবিচলিত অনুরাগ হেতু তাঁহার অন্তরে ধর্ম্মপ্রচারের আকাঙ্ক্ষারূপ যে বহ্নি প্রজ্জ্বলিত হইয়াছিল তাহা ধারণার অতীত।
সম্রাট্ অশোক রুগ্ন নরনারীর ও জীবজন্তর জন্য দাতব্য-চিকিৎ-