পাতা:বৌদ্ধ-ভারত.djvu/৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬
বৌদ্ধ-ভারত

রাজ পুষ্যমিত্র বৌদ্ধদিগকে নির্য্যাতন করিয়া কু-কীর্ত্তি অর্জ্জন করেন।

 তাঁহার পুত্ত্র অগ্নিমিত্রের সহিত গ্রীকদিগের যুদ্ধে হইয়াছিল। গ্রীক সেনাপতি রাজা মিণ্ডার এই যুদ্ধে বিজয়ী হইয়াছিলেন। ইনি মহাস্থবির নাগসেনের সহিত বৌদ্ধধর্ম্মতত্ত্ব সম্বন্ধে যে আলোচনা করিয়াছিলেন উহা “মিলিন্দপঞ্‌হো” নামক সুপ্রসিদ্ধ বৌদ্ধগ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। মহাযান বৌদ্ধদের এই ধর্ম্মগ্রন্থ হীনযান সম্প্রদায়ে বৌদ্ধগণও পরম শ্রদ্ধাসহকারে অধ্যয়ন করিয়া থাকেন।

 খৃষ্টীয় প্রথম শতাব্দীতে কুষণ বংশীয় নরপতি কণিষ্ক কাশ্মীর জয় করেন। বিন্ধ্যগিরি হইতে আরম্ভ করিয়া সমগ্র উত্তর ভারত, কাশ্মীর, ইয়রখণ্ড, খাস্‌গর, খোকন প্রভৃতি রাজ্য এই প্রবল প্রতাপান্বিত ভূপতির করতলগত হইয়াছিল। সম্রাট অশোকের মৃত্যুর পরে মৌর্য্যবংশের গৌরবরবি অস্তমিত হইয়াছিল। তাঁহার পরে কণিষ্কের তুল্য শক্তিশালী রাজা ভারতবর্ষে আর রাজত্ব করে নাই। সম্রাট্ কণিষ্কও বৌদ্ধধর্ম্মে বিশেষ অনুরাগী ছিলেন। স্তূপ ও বিহার নির্ম্মাণ এবং প্রচারক প্রেরণ করিয়া তিনি এই ধর্ম্মের বহুল প্রচারে বিশেষ আগ্রহ প্রদর্শন করিয়াছেন। কণিষ্কের রাজত্বকালে চীনে বৌদ্ধধর্ম্ম প্রচার হইতে আরম্ভ হইয়াছিল।

 পার্শ্বব নামক এক স্থবিরের নিকট কণিষ্ক অবসর সময়ে বৌদ্ধধর্ম্মশাস্ত্র অধ্যয়ন করিতেন। নানাদলের নানাপ্রকার শাস্ত্রব্যাখ্যা শুনিয়া অনেক সময়ে সম্রাট্ হতবুদ্ধি হইতেন। সম্রাট স্থবিরকে জানাইলেন যে, ধর্ম্মশাস্ত্রের যথার্থ তাৎপর্য্য ব্যাখ্যাত হওয়া উচিত। সম্রাটের এই অভিপ্রায় অননুসারে বৌদ্ধধর্ম্মশাস্ত্র আলোচনার নিমিত্ত এক মহাসভা আহূত হয়। স্থবির বসুমিত্র এই সভার সভাপতি এবং বুদ্ধচরিত-প্রণেতা অশ্বঘোষ সহকারী সভাপতি বৃত হইয়াছিলেন। অনেকদিন এই মহাসভার অধিবেশন হইয়াছিল। প্রথমতঃ কাশ্মীরের কুন্দল বনবিহার, পরে জালন্ধরের কুবল সঙ্ঘারামে মহা-সভার অধিবেশন হইয়াছিল। এই সভায় মূল বৌদ্ধশাস্ত্র অবলম্বনে উপদেশ,