পাতা:বৌদ্ধ-ভারত.djvu/৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৭
পঞ্চম অধ্যায়

বিভাস, অভিধর্ম্মবিভাস নামক তিনখানি ভাষ্যগ্রন্থ সংস্কৃতে সঙ্কলিত হয়। এই গ্রন্থত্রয়ই মহাযান সম্প্রদায়ের বৌদ্ধদের শাস্ত্রগ্রন্থ হইয়া গিয়াছে।

 এই সময় হইতে বৌদ্ধধর্ম্মের উভয় শাখার মধ্যে ব্যবধান বর্দ্ধিত হইল। উভয়ের ধর্ম্মশাস্ত্র মূলতঃ এক হইলেও বস্তুত পৃথক হইল। উভয় সম্প্রদায়ের বুদ্ধও নামে এক হইলেও যথার্থতঃ এক নহেন। হীনযানীয় বুদ্ধ মহাপুরুষ, নরসিংহ কিন্তু মহাযানীর বুদ্ধ দেবতা, শ্রদ্ধাশীল ভক্তদের হৃদয় হইতে তাঁহার উদ্ভব হইয়াছে। মহাযান বৌদ্ধধর্ম্ম বৌদ্ধধর্ম্মের আদিম মূর্ত্তি রক্ষা করিতে পারেন নাই বলিয়া ক্ষোভের কোনো কারণ নাই। বীজ হইতে বনস্পতির উদ্ভব, বনস্পতির সহিত বীজের আকৃতিগত সাদৃশ্য না থাকিলেও উহা বীজেরই সার্থক পরিণতি।

 খৃষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে চীনের এক সম্রাট্ বৌদ্ধগ্রন্থ সংগ্রহ করিয়াছিলেন; তখন হইতেই চীনে বৌদ্ধধর্ম্ম প্রচারিত হইয়া থাকিবে। খৃষ্টের প্রথম শতকে কুশান নরপতি কণিষ্কের শাসনকালে ভারতীয় বৌদ্ধ ভিক্ষুগণ চীনে এই ধর্ম্ম প্রচার করেন। সেই সময়ে চীনে হ্যানবংশীয় সম্রাট্ মিংতি রাজত্ব করিতেছিলেন। পিকিঙ্ নগর হইতে পাঁচশত মাইল দক্ষিণপূর্ব্বে তাঁহার রাজধানী অবস্থিত ছিল। তাঁহার রাজধানী হেনান নগরেই সর্ব্বপ্রথমে বৌদ্ধকেন্দ্র স্থাপিত হইয়াছিল। হেনান নগর হেনানপ্রদেশের রাজধানী। এখন এই প্রদেশের লোক সংখ্যা প্রায় ২ কোটি।

 সম্রাট্, মিংতি পেশোয়ারে সম্রাট কনিষ্কের রাজসভায় সাই-ইন (Tsai yin) নামক এক দূত প্রেরণ করিয়াছিলেন। মাতঙ্গ ও ধর্ম্মরক্ষ নামক দুই জন বৌদ্ধসাধু ইহার সহিত চীন দেশে গমন করেন। ইহাদের সঙ্গে বহু সংখ্যক বৌদ্ধগ্রহ প্রেরিত হইয়াছিল। ঐ শ্বেত অশ্বের পৃষ্ঠে ঐ গ্রন্থরাজি বাহিত হইয়াছিল। ঐ শ্বেত অশ্বের মৃত্যু হইলে হেনান নগরে যে স্থানে উহাকে সমাধিস্থ করা হয় সেই স্থানে এক প্যাগোডা (মন্দির) নির্ম্মিত হইয়াছে। উহার নাম