পাতা:বৌদ্ধ-ভারত.djvu/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৮
বৌদ্ধ-ভারত

পাই-মা-জু বা শ্বেতাশ্ব মন্দির।

 এই সময় হইতে চীনে বৌদ্ধধর্ম্ম প্রচারিত হইতে থাকে। তখন হইতে খৃষ্টের ত্রয়োদশ শতক পর্য্যন্ত হেনানে সকল সময়ে ভারতীয় ধর্ম্ম, সাহিত্য, দর্শন ও শিল্প আদৃত হইতেছিল।

 খ্রীষ্টের তৃতীয় শতকে উ-তি চীন সম্রাট ছিলেন। তাঁহার শাসন সময়ে বোধি-ধর্ম্ম নামক এক ভারতীয় ভিক্ষু হেনানে গমন করিয়া ধ্যান-তত্ত্ব প্রচার করেন। হেনানের নিকটবর্ত্তী সুংশান পাহাড়ে অনেকগুলি বৌদ্ধমন্দির আছে। তথাকার শাওলিংজু নামক মন্দিরে ভিক্ষু বোধিধর্ম্ম নয় বৎসরকাল ধ্যানে মগ্ন ছিলেন।

 খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে চীনদেশে বৌদ্ধধর্ম্মানুরাগী সম্রাট্ তাই-সুঙ্ রাজত্ব করিতেন। তিনি হেনান নগরে এক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় নানাশাস্ত্র বিশেষভাবে আলোচিত হইত। ঐ বিশ্ববিদ্যলয়ের অধ্যাপকগণ ভারতের ধর্ম্ম ও ভারতের সভ্যতা সমগ্র চীনে এবং কোরিয়া ও জাপানে প্রচারিত করেন। খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীর মধ্যভাগে চীনের সহিত ভারতের আদান-প্রদানের যোগ বিশেষভাবে ছিল। সম্রাট্ তাইসুঙের শাসনকালে চীনাভিক্ষু উয়ান-চুয়াঙ্ ভারত-ভ্রমণে আগমন করেন। তিনি বহুবৎসর ভারতবর্ষে ছিলেন। তাঁহার ভ্রমণ-বৃত্তান্ত ভারত-ইতিহাসের মূল্যবান্ তথ্যে পূর্ণ। উয়ান-চুয়াঙ্ হেনানে প্রত্যাবৃত্ত হইবার পরে ই-চিঙ্ ভারত-ভ্রমণে বাহির হন। বুদ্ধের জন্মভূমি ভারতবর্ষকে তখন বৌদ্ধধর্ম্মানুরাগী চীনারা স্বর্গভূমি বলিয়া মনে করিতেন। ই-চিঙ্ এই স্বর্গে ২৫ বৎসর বাস করিয়া স্বদেশে গমন করেন। এই সময় হইতে প্রায় ছয়শত বৎসর কাল চীনা নরনারীর সমগ্র জীবনে ভারতীয় ধর্ম্ম ও সভ্যতা অসামান্য প্রভাব বিস্তার করিয়াছিল।

 জাপানের ঠিক কোন্ সময়ে বৌদ্ধধর্ম্ম প্রচারিত হয় তাহা অসংশয়ে বলা যায় না। মোটামুটি ইহা বলা যায় যে, খৃষ্টের ষষ্ঠ শতকে জাপানে বৌদ্ধধর্ম্ম প্রচারিত হইয়াছিল। ঐ সময় হইতে