পাতা:বৌদ্ধ-ভারত.djvu/৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠ অধ্যায়
৫৩

প্রাচীনকালের শিক্ষার কোন ইতিবৃত্ত নাই, তবে জাবাল, সত্যকাম, বেদ, আরুণি, উপমন্যু ও উতঙ্ক প্রভৃতি বিদ্যার্থীদের গুরুভক্তির আখ্যানমধ্যে তদানীন্তন শিক্ষাপদ্ধতির কিঞ্চিৎ আভাস পাওয়া যাইতে পারে।

 পরলোকগত শরচ্চন্দ্র শাস্ত্রী মহাশয় নৈমিষারণ্যকে প্রাচীন ভারতের অন্যতম শিক্ষাকেন্দ্র বলিয়া নির্দ্দেশ করিয়াছেন। তিনি লিখিয়াছেন—“স্থিরবাহিনী পুণ্যসলিলা গোমতী কঙ্কনের ন্যায় নৈমিষ কাননকে বেষ্টন করিয়া ধীরে ধীরে প্রবাহিত হইতেছে। সেই পুরাকালে বহু ঋষি এখানে বাস করিতেন। এখানেই বেদের অধিকাংশ আরণ্যক রচিত হয়। দেশ-দেশান্তরের ঋষিগণ নৈমিষারণ্যে আসিয়া শিক্ষা লাভ করিতেন এবং স্বদেশে গিয়া মঠ স্থাপনপূর্ব্বক লব্ধজ্ঞান প্রচার করিতেন। এইরূপে সমগ্র ভারতে বেদবাণী প্রচারিত হইত।”

 অরণ্যের সাধনা ও শিক্ষা এইরূপে জনসমাজের উপর পতিত হইয়া রাজা প্রজা সকলকে কল্যাণবর্ত্মে পরিচালিত করিত। ঋষিদের অধ্যাত্ম প্রভাবে তখন অসীম বলসম্পন্ন ভূপতিগণ কম্পিত হইতেন। বৈদিক যুগের এই শিক্ষাপদ্ধতি বৌদ্ধ যুগেও প্রচলিত ছিল। বৌদ্ধ যুগে ভারতে যে সভ্যতার ধারা প্রবাহিত হইছিল সাধনানিরত বৌদ্ধ ভিক্ষুগণের নিভৃতনিবাস হইতেই সেই ধারা উত্থিত হইত। নির্জ্জন গিরিগুহা এবং শান্ত-সুন্দর পল্লী ও নগরোপকণ্ঠবাসী বৌদ্ধসাধুগণের বিহারগুলিই বৌদ্ধযুগের শিক্ষানিকেতন ছিল।

তক্ষশিলা

 তক্ষশিলা বিশ্ববিদ্যালয় ভারতীয় বিদ্যামহাপীঠ সমূহের মধ্যে প্রাচীন ও সুপ্রসিদ্ধ। ভগবান্ বুদ্ধের প্রাদুর্ভাবকালেই এই বিশ্ববিদ্যালয় বিদ্যমান ছিল। ঐতিহাসিকগণ যে সময়কে বৌদ্ধযুগ আখ্যা প্রদান করেন, তাহার পূর্ব্ববর্ত্তী কালেই তক্ষশিলায় বৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয় ছিল বলিয়া মনে হয়। তক্ষশিলা প্রাচীন গান্ধার