রাজ্যের রাজধানী ছিল। রাওলপিণ্ডি নগরের ২০ মাইল দূরে সরইকালা নামক রেলওয়ে জংশনের অব্যবহিত উত্তর ও উত্তর-পূর্ব্বে ছয় বর্গমাইল স্থান ব্যাপিয়া প্রাচীন তক্ষশিলার ধ্বংসস্তূপ এখনও পরিলক্ষিত হইয়া থাকে। ষ্ট্রাবো, প্লিনি, আরিয়ন প্রভৃতি প্রসিদ্ধ গ্রীক লেখকগণ তাঁহাদের গ্রন্থে তক্ষশিলার সমৃদ্ধি ও বিদ্যাগৌরবের ভূয়সী প্রশংসা করিয়াছেন। ভুবনবিজয়ী আলেকজাণ্ডারের জন্মের বহু পূর্ব্বেই তক্ষশিলা-বিশ্ববিদ্যালয়ের কীর্ত্তি দিগন্তবিশ্রুত হইয়াছিল। ভারতীয় আর্য্যগণ অতি প্রাচীন কালেই এই স্থানে উপনিবেশ স্থাপন করিয়াছিলেন। মহাভারতে উক্ত হইয়াছে যে, জন্মেঞ্জয় এখানে সর্পযজ্ঞ করিয়াছিলেন। হয় তো ঐ কিংবদন্তীর মধ্যে তখনকার আর্য্য-অনার্য্য-বিরোধের তত্ত্ব প্রচ্ছন্ন রহিয়াছে। এইরূপ অনুমিত হয় যে, অত্রত্য বিদ্যায়তন বহুশতবর্ষ অক্ষুণ্ণ প্রতাপে বিরাজ করিয়াছিল। যাঁহার কুটনীতি বলে নন্দবংশ ধ্বংস হইয়াছিল, মৌর্য্যভূপতি চন্দ্রগুপ্তের সেই বিশ্বস্ত মন্ত্রী চাণক্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপণ্ডিত ছাত্র ছিলেন। অষ্টাধ্যায়ী ব্যাকরণ সূত্র রচনা করিয়া যিনি অমরতা লাভ করিয়াছেন সেই পাণিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রসিদ্ধ ছাত্র। গান্ধার রাজ্যের শালাতুর গ্রামে পাণিনির নিবাস ছিল। মগধের অন্তর্গত কুসমপুর গ্রামের বর্ষনামক তদানীন্তন সুপ্রসিদ্ধ এক অধ্যাপকের নিকটও তিনি বহুবৎসর ব্যাকরণ শিক্ষা করিয়াছিলেন।
গোভরণ (কেহ বলেন ধর্ম্মরক্ষ) ও মাতঙ্গ তক্ষশিলার অপর দুই প্রসিদ্ধ ছাত্র। তাঁহারা খৃষ্টীয় ৬৭ অব্দে বৌদ্ধধর্ম্ম প্রচারার্থ চীনদেশে গমন করিয়াছিলেন। তক্ষশিলা-বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতি দেশদেশান্তরে পরিব্যাপ্ত হইয়াছিল। গুপ্ত রাজাদিগের শাসনসময়ে চীনদেশ হইতে দলে দলে ছাত্র এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যাশিক্ষার্থ আগমন করিত।
পঞ্চায়ুধ, অসাতমন্ত্র, বরণ, তিলমুষ্টি প্রভৃতি বৌদ্ধ জাতকে স্থানে স্থানে এইরূপ উক্ত হইয়াছে যে, তক্ষশিলা এককালে নিখিল ভারতের সুপ্রসিদ্ধ বিদ্যাশিক্ষার কেন্দ্র ছিল। এখানে বিবিধ ললিত