ঐতিহাসিকগণের বর্ণনাপাঠে জানা যায় যে, তক্ষশিলা সমৃদ্ধ, জনবহুল, সুশাসিত রাজ্য ছিল। তখন ঐ দেশে বহুবিবাহ ও সহমরণ প্রথা প্রচলিত ছিল।
তক্ষশিলা ভারত সীমান্তে অবস্থিত। ঐ নগর বহুশতাব্দী কেবল ভারতের নহে, সমগ্র এশিয়া মহাদেশের জ্ঞান-পিপাসুদের আশ্রয়স্থল ছিল। চীনদেশের সাহিত্যে তক্ষশিলার উল্লেখ আছে। তখনকার এক রাজপুত্ত্র চিকিৎসাশাস্ত্র শিক্ষার জন্য তক্ষশিলায় আসিয়াছিলেন। মহাবগ্গে বর্ণিত হইয়াছে যে, জীবক তক্ষশিলায় এক দেশপ্রসিদ্ধ আচার্য্যের নিকট চিকিৎসাবিদ্যা অধ্যয়ন করেন। তক্ষশিলা আয়ুর্ব্বেদ শিক্ষার পক্ষে অতিশয় অনূকূল ক্ষেত্র ছিল তাহাতে কোন সন্দেহ থাকিতে পারে না। মহাবগ্গে এইরূপ উক্ত হইয়াছে যে, জীবককে তাঁহার অধ্যাপক মহাশয় এই অনুমতি করেন—“যাও, তুমি কোদালি লইয়া তক্ষশিলার সকল দিকে এক যোজন মধ্যে যত গাছ গাছড়া আছে পরীক্ষা কর, যে সকল গাছ গাছরা ঔষধরূপে ব্যবহৃত হইতে পারে না সেইগুলিই লইয়া আসিও।” জীবক এইরূপ কোন গাছ গাছড়া লইয়া আসিতে পারেন নাই।
তক্ষশিলার ছাত্রদিগকে বহু বিষয় মুখে মুখে শিক্ষা দেওয়া হইত। পরবর্ত্তী কালে নালন্দা ও অপর বিশ্ববিদ্যালয় সমূহে ছাত্রগণ হস্তলিপি-গ্রন্থ পাঠ করিতে পাইত। যাহাতে ছাত্রগণ শিক্ষণীয় বিষয় মনে রাখিতে পারে তজ্জন্য তাহাদিগকে সূত্রের সাহায্য শিক্ষাদান করা হইত।
ভারতবর্ষের সকল অঞ্চলের সর্ব্বশ্রেণীর ছাত্র এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যাশিক্ষা করিতে যাইত। এখানে কোশলরাজ প্রসেনজিতের মত রাজবংশীয় এবং জীবকের মত সাধারণ লোক সমভাবেই স্থান পাইত। ভারতবর্ষের বহুরাজ্যের রাজপুত্ত্রগণ এখানে ধনুর্ব্বিদ্যা শিক্ষা করিতেন। এখানে ধনুর্ব্বেদ, আয়ুর্ব্বেদ, গান্ধর্ব্ববিদ্যা, অর্থশাস্ত্র, ব্যাকরণ, বেদ-বেদান্ত প্রভৃতি বিবিধ শাস্ত্র শিক্ষাদান করা হইত। মহাসুতসোম জাতকে উক্ত হইয়াছে যে, তক্ষশিলায় শত শত রাজকুমার