পাতা:বৌদ্ধ-ভারত.djvu/৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠ অধ্যায়
৫৭

অস্ত্রবিদ্যা শিক্ষা করিতেন। এই স্থলে শিক্ষা অতি উত্তম হইত। পূর্ব্বকালে রাজকুমারগণ তাঁহাদের স্ব স্ব নগরেই অস্ত্রবিদ্যা শিক্ষা করিতে পারিতেন কিন্তু ভূপতিগণ তথাপি রাজকুমারদিগকে বহুদূরবর্ত্তী তক্ষশিলায় পাঠাইতেন; কারণ এখানকার শিক্ষায় তাঁহাদের বৃথা অহঙ্কার চূর্ণ এবং মন উদার হইত। ইহাতে রাজকুমারগণ শীততাপ সহ্য করিতে শিখিতেন এবং সর্ব্বশ্রেণীর লোকের আচারব্যবহারের সহিত পরিচিত হইবার সুযোগ পাইতেন ৷

 এইখানে ছাত্রগণ প্রত্যেক বিষয় বিশেষজ্ঞ পণ্ডিতের নিকট শিক্ষা করিত। ধনী ছাত্রগণ অধ্যাপককে সহস্র স্বর্ণমদ্রা দক্ষিণা দিত। দরিদ্র ছাত্রগণ দিবারাত্র গুরুসেবা করিত।

 মৌর্য্য-ভূপতি চন্দ্রগুপ্ত গ্রীকদিগকে বিতাড়িত করিয়া তক্ষশিলা ও পাঞ্জাবের অপর সকল স্থান স্বরাজ্যভুক্ত করেন। তাঁহার রাজ্য হিন্দুকুশ পর্ব্বত পর্য্যন্ত বিস্তৃত হইয়াছিল। পিতার জীবদ্দশায় অশোক তক্ষশিলার শাসনকর্ত্তা ছিলেন। তাঁহার রাজত্বসময়ে এই অঞ্চলে বৌদ্ধ ধর্ম্ম প্রচারিত হইয়াছিল। অশোকের পুত্ত্র কুলান এই স্থানে বাস করিতেন। অতঃপর কুষাণকুলোদ্ভব কণিষ্ক এদেশের রাজা হন। তাঁহার শাসনকর্ত্তারা এই দেশ শাসন করিতেন। তাঁহাদের কতগুলি মুদ্রা ও উৎকীর্ণ লিপি পাওয়া গিয়াছে। একখানি উৎকীর্ণ লিপিতে ‘তক্ষশিলা’ নাম অঙ্কিত রহিয়াছে।

 খৃষ্টীয় প্রথম শতাব্দীতে তক্ষশিলা “অমন্দ্র” নামে পরিচিত ছিল। তক্ষশিলার ভূমি অতিশয় উর্ব্বরা। এখানে অনেকগুলি নদী ও নির্ঝর আছে। ফল ও পুষ্প প্রচুর জন্মে। এখানকার দৃশ্য অতি মনোহর। নগরের উত্তর-পশ্চিমাংশে নাগরাজ এলাপত্রের সরোবর। এই সরোবরের দক্ষিণ-পূর্ব্বে অশোকনির্ম্মিত এক গুহা আছে। নগরের উত্তরাংশে অশোকনির্ম্মিত স্তূপ রহিয়াছে। পর্ব্বদিবসে নাগরিকগণ এই স্তূপ পষ্প ও আলোকমালায় সুশোভিত করিত।

 এখানে যে সকল স্তূপ ও বিহারের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হইয়াছে তন্মধ্যে ধর্ম্মরাজিক স্তূপ, কুলান স্তূপ, শির্‌কপের মন্দির, জাণ্ডিয়াল