পাতা:বৌদ্ধ-ভারত.djvu/৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৮
বৌদ্ধ-ভারত

মন্দির, লালচক ও বাদলপুরের বৌদ্ধ বিহার এবং মোহরামোরাডু ও জুলিয়নের প্রসিদ্ধ স্তূপ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

 তক্ষশিলার এই ধ্বংসরাজির বিশালতা এই নগরের গৌরবময়ী পূর্ব্বস্মৃতি দর্শকমাত্রের হৃদয়ে জাগরিত করিয়া দেয়।

নালন্দা

 খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় ভারতের সর্ব্বশ্রেষ্ঠ বিদ্যানুশীলনের ক্ষেত্র ছিল। এইরূপ কথিত আছে যে, মহামতি অশোক মগধের রাজধানী পাটলীপুত্ত্র হইতে ত্রিশ মাইল দূরে ফল্গুনদীর তীরে এক বৌদ্ধবিহার নির্ম্মাণ করেন। নরেন্দ্র অশোকনির্ম্মিত এই বিহার “নরেন্দ্রবিহার” নামে অভিহিত হইত। এই বিহারই পালিভাষায় নালন্দা নামে উক্ত হইত। কেহ কেহ বলেন বিহারের দক্ষিণে আম্রোদ্যানের সরোবরে এক ‘নাগ’ বাস করিত। সেই নাগের নাম হইতে বিহারের নাম নালন্দা হইয়াছে। উত্তরকালে শঙ্কর ও মুদ্‌গলগোমীনামক দুই প্রসিদ্ধ পণ্ডিত ঐ বিহারকে বর্দ্ধিত করিয়া নবভাবে নির্ম্মিত করিয়াছিলেন। মহাযান বৌদ্ধধর্ম্মের সুপ্রসিদ্ধ অনুরাগী সুপণ্ডিত নাগার্জ্জুন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার পরে কিয়ৎকাল শঙ্করের নিকট শাস্ত্রাভ্যাস করিয়াছিলেন। অতঃপর নাগার্জ্জুন কৃষ্ণানদীর তীরবর্ত্তী সুধন্যকটক নামক স্থলে স্বয়ং এক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করিয়াছিলেন। আধুনিক পাটনা জিলায় বরগাঁও গ্রামে নালন্দার ধ্বংসাবশেষ দৃষ্ট হইয়া থাকে।

 নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় এককালে এইরূপ সুবৃহৎ হইয়া উঠিয়াছিল যে, তথায় দশ সহস্র ভিক্ষু ও ছাত্র বাস করিতেন। অধ্যাপক ও ছাত্রদের প্রত্যেকের বাসের জন্য পৃথক্ পৃথক্ ঘর ছিল। প্রত্যেকটি ঘর দৈর্ঘ্যে ১২ হাত ও প্রস্থে ৮ হাত, ভারতবর্ষের নানা প্রদেশস্থ নৃপতিবর্গের স্বেচ্ছাপ্রদত্ত দানে এই মহাবিদ্যালয়ের ব্যয় নির্ব্বাহ হইত। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সহস্র পাঁচশত দশজন অধ্যাপক