পাতা:বৌদ্ধ-ভারত.djvu/৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বৌদ্ধ-ভারত
৬২

সন্দেহ করিবার হেতু নাই। ফাহিয়েন যখন এই পুণ্যতীর্থে আগমন করিয়াছিলেন তখন দেড় সহস্র বিদ্যার্থী এখানে ধর্ম্মশাস্ত্র অধ্যয়ন করিতেন।

বিক্রমশিলা

 নালন্দার অধঃপতনের পর পাল রাজগণের পৃষ্ঠপোষকতায় ওদন্তপুরী ও বিক্রমশিলা বিদ্যায়তন জাগিয়া উঠিয়াছিল। নালন্দা, বিক্রমশিলা ওদন্তপরীর পুস্তকালয় হইতেই তিব্বতীয় বৌদ্ধগণ হস্তলিপি গ্রন্থ সংগ্রহ করিয়াছিলেন। ঐ সকল হস্তলিপি গ্রন্থ হইতেই আধুনিক সুবিস্তৃত তিব্বতীয় সাহিত্যের উদ্ভব হইয়াছে। ওদন্তপুরীর গ্রন্থালয় আকারে নালন্দার গ্রন্থালয়কেও ছাড়াইয়া উঠিয়াছিল। এখানে বৌদ্ধ ও ব্রাহ্মণ্য ধর্ম্মের বহু হস্তলিপি গ্রন্থ ছিল। ১২০২ খৃষ্টাব্দে বক্তিয়ার যখন বিহার জয় করেন তখন তাঁহার সেনাপতি এই গ্রন্থালয়ের ধ্বংস সাধন করেন।

 বৌদ্ধ বিদ্যায়তন বিক্রমশিলা প্রাচীন মগধ রাজ্যে অবস্থিত ছিল। এইরূপে কথিত আছে যে, পালবংশীয় দ্বিতীয় ভূপতি ধর্ম্মপাল ইহার প্রতিষ্ঠাতা। তাঁহার পিতা গোপাল পালবংশের প্রথম রাজা। গোপাল, ভূপাল ও লোকপাল এই তিন নামেই তিনি পরিচিত ছিলেন। কানিংহাম সাহেব বলেন, ধর্ম্মপাল অষ্টম শতাব্দীর মধ্য বা শেষ ভাগে রাজত্ব করিতেন।

 সপ্তম শতাব্দীতে চীনদেশ হইতে প্রসিদ্ধ পরিব্রাজক উয়ান চুয়াঙ্ ও ই-চিঙ্ ভারতবর্ষে বৌদ্ধতীর্থ দর্শনার্থ আগমন করিয়াছিলেন; তাঁহাদের ভ্রমণ বৃত্তান্তে বিক্রমশিলার উল্লেখ নাই। সম্ভবতঃ অষ্টম শতাব্দীর মধ্যভাগে এই বিদ্যায়তন স্থাপিত হইয়াছিল।

 বৌদ্ধধর্ম্মেতিহাস গ্রন্থে প্রকাশ, মগধ রাজ্যে গঙ্গাতটবর্ত্তী প্রদেশে এক প্রশস্তাগ্র উচ্চ শৈলের উপর বিক্রমশিলা বিহার অবস্থিত। উক্ত ছয়দ্বারী বিহারের মধ্যবর্ত্তী বিস্তৃত প্রাঙ্গণে আট সহস্র লোকের