পাতা:বৌদ্ধ-ভারত.djvu/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সপ্তম অধ্যায়
৬৫

 ঐতিহাসিক অধ্যাপক ওয়েবর বলেন, পরাশর ভারতীয় জ্যোতিষীদের মধ্যে প্রাচীনতম। তারপরে গর্গ। বেদপঞ্জীমধ্যে পরাশরের নাম পাওয়া যায়। ইহা ছাড়া তাঁহার সম্বন্ধে আর কিছু জানা যায় না। পরাশরতন্ত্র নামক গ্রন্থে পরাশরের উপদেশাবলী রহিয়াছে। পৌরাণিক যুগে এই পুস্তকের বিলক্ষণ আদর ছিল। বরাহমিহির পরাশর-তন্ত্র হইতে বহু বাক্য উদ্ধৃত করিয়াছেন। সেই সকল বচন হইতে মনে হয় পরাশরের রচনা অধিকাংশ অনুষ্টূভে লিখিত হইয়াছিল। পরাশর লিখিয়াছেন,—“যবন বা গ্রীকগণ পশ্চিম ভারতে বাস করিতেন।” ইহা হইতে নির্দ্ধারিত হইয়াছে যে, যবন বা গ্রীকগণ খৃষ্ট-পূর্ব্ব দ্বিতীয় শতাব্দীতে ভারতবর্ষে অবস্থান করিতেন।

 গ্রীক পণ্ডিতদের সাহচর্য্যে ভারতীয় জ্যোতিষীরা জ্যোতিষশাস্ত্র আলোচনায় বিশেষরূপ উন্নতি লাভ করিয়াছিলেন তদ্বিষয়ে সন্দেহ নাই ৷

 জ্যোতিষী গর্গ সম্বন্ধে অতি সামান্যই জ্ঞাত হইতে পারা গিয়াছে। তিনি গ্রীকদের ভারত-আক্রমণ বর্ণনা করিয়াছেন। উহা খৃষ্টপূর্ব্ব দ্বিতীয় শতাব্দীর ঘটনা। তিনি গ্রীকদিগকে “ম্লেচ্ছ” বলিলেও ইহা লিখিয়াছেন—“যবনেরা (গ্রীক) ম্লেচ্ছ, কিন্তু তাঁহারা জ্যোতিষ শাস্ত্রে সুপণ্ডিত। তাঁহারা ব্রাহ্মণ-জ্যোতিষীদের অপেক্ষা বহুগুণে সম্মানের পাত্র। তাঁহারা ঋষি।”

 খৃষ্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীতে বরাহমিহির “পঞ্চ-সিদ্ধান্তিকা” নামে যে গ্রন্থ রচনা করেন সেই গ্রন্থ (১) ব্রহ্মা বা পিতামহ (২) সূর্য্য বা সৌর (৩) বশিষ্ঠ (৪) রোমক এবং (৫) পুলিশ এই পঞ্চসিদ্ধান্ত অবলম্বনে রচিত।

 সূর্য্যসিদ্ধান্ত ভারতীয় জ্যোতিষীদের সুপ্রসিদ্ধ প্রামাণ্য গ্রন্থ। কিন্তু, এক্ষণে ঐ গ্রন্থ যেরূপ আকারে দৃষ্ট হয় উহার সহিত মূল গ্রন্থের কতদূর সামঞ্জস্য আছে তাহা নির্ণয় করা দুরূহ। বরাহমিহিরের টীকাকার উৎপল খৃষ্টীয় দশম শতাব্দীর অন্যতম প্রসিদ্ধ পণ্ডিত। তিনি সূর্য্যসিদ্ধান্ত হইতে তাঁহার রচনায় ছয়টি শ্লোক