পাতা:বৌদ্ধ-ভারত.djvu/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৬
বৌদ্ধ-ভারত

উদ্ধৃত করিয়াছিলেন। আধুনিক গ্রন্থে সেই শ্লোকগুলির একটিও দৃষ্ট হয় না। যাহা হউক আধুনিক সূর্য্যসিদ্ধান্ত চতুর্দ্দশ অধ্যায়ে বিভক্ত। গ্রহদের সংস্থান, চন্দ্র সূর্য্যের গ্রহণ, গ্রহ ও নক্ষত্রদের সমসূত্র সংযোগ, তাহাদের উদয়াস্ত, পৃথিবীর সূর্য্যপ্রদক্ষিণ পথের সহিত তার মেরুদণ্ডের অবনতি, চন্দ্রের পৃথিবীপ্রদক্ষিণপথের সহিত পৃথিবীর মেরুদণ্ডের অবনতি, এবং জ্যোতিষ আলোচনার নানাপ্রকার যন্ত্র-নির্ম্মাণ-তথ্য এই গ্রন্থে লিপিবদ্ধ হইয়াছে।

 ঐতিহাসিক আল্ বরুণি (Alberuni) বলেন, বশিষ্ঠ সিদ্ধান্ত ব্রহ্মগুপ্তের রচিত। কিন্তু, ব্রহ্মগুপ্তই লিখিয়াছেন—ঐ সিদ্ধান্ত বিষ্ণচন্দ্র সংশোধিত করিয়া লিখিয়াছেন। তিনি অতি প্রাচীনকালের জ্যোতিষী।

 আল্‌বিরুণি ও ব্রহ্মগুপ্ত দুই জনেই লিখিয়াছেন যে, রোমক সিদ্ধান্ত যিনি প্রণয়ন করিয়াছেন তাঁহার নাম শ্রীসেন।

 আল্‌বিরুণি লিখিয়াছেন যে, পুলিশ সিদ্ধান্ত একখানি তাঁহার হস্তগত হইয়াছিল। তিনি বলেন, পলেস (Paules) নামক এক গ্রীক পণ্ডিত উহার রচয়িতা। কিন্তু অধ্যাপক ওয়েবার উহা স্বীকার করেন না, তিনি বলেন, সম্ভবতঃ প্রসিদ্ধ গ্রীক জ্যোতিষী পলাস আলেকজেণ্ড্রিনাস (Alexandrinus) ঐ গ্রন্থের প্রণেতা।

 উল্লিখিত পঞ্চসিদ্ধান্ত ষষ্ঠ শতাব্দীতে বরাহমিহির সঙ্কলন করিয়া তাঁহার প্রসিদ্ধ গ্রন্থ পঞ্চসিদ্ধান্তিকা রচনা করিয়াছিলেন।

 ভারতীয় হিন্দুগণ গ্রীকপণ্ডিতদের নিকট জ্যোতিষশাস্ত্রের তথ্য অল্পাধিক অবগত হইলেও জ্যোতিষগণনার সূক্ষ্মতা ও যাথাতথ্যে তাঁহারা তাঁহাদের গুরু গ্রীকপণ্ডিতদিগকে অতিক্রম করিয়াছিলেন। যে-সকল ইয়ুরোপীয় পণ্ডিত সহৃদয়তার সহিত ভারতীয় হিন্দুসভ্যতার আলোচনা করিয়াছেন এবং অপক্ষপাতভাবে ভারতীয়দিগকে তাঁহাদের প্রাপ্য গৌরব অর্পণ করিয়াছেন অধ্যাপক কোলব্রুক (Cole Brooke) তাঁহাদের মধ্যে সুবিখ্যাত। তিনি লিখিয়াছেন—“সেই সুদূর অতীত কালেই ভারতীয় হিন্দুগণ জ্যোতিষশাস্ত্রে কথঞ্চিৎ