পাতা:বৌদ্ধ-ভারত.djvu/৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সপ্তম অধ্যায়
৬৯

চিকিৎসাবিদ্যা আলোচিত হইয়াও উন্নতি লাভ করিয়াছিল এইরূপ অনুমান করা যাইতে পারে।

 ভারতীয়-চিকিৎসাশাস্ত্রের প্রসিদ্ধ গ্রন্থকার চরক বৌদ্ধযুগেই তাঁহাদের গ্রন্থ-রচনা করিয়াছিলেন। উত্তরকালে তাঁহাদের গ্রন্থাবলী পরিশোধিত ও পরিবর্দ্ধিত হইলেও বৌদ্ধযুগেই তাঁহারা চিকিৎসাশাস্ত্র প্রণয়ন ও প্রচার করিয়াছিলেন।

 ইয়ুরোপীয় বহু পুরাতত্ত্ববিৎ পণ্ডিত আর্য্যসভ্যতার আলোচনা করিয়া গ্রীকদিগকেই সকল জ্ঞানবিজ্ঞানের স্রষ্টা বলিয়া নির্দ্দেশ করিতে প্রচেষ্ট হইয়া থাকেন। ইঁহাদের এই অন্ধ সংস্কার অপক্ষপাত বিচারের বিরোধী। আধুনিক লেখকগণের চেষ্টা যাহাই হউক গ্রীকেরা কিন্তু কদাচ এমন দাবী করেন না যে, প্রাচীন সভ্যতার তাঁহারাই জনক।

 গ্রীক ঐতিহাসিক নিয়ারকাস (Nearchus) বলেন—“গ্রীক চিকিৎসকগণ সর্পদষ্ট ব্যক্তিকে চিকিৎসা করিয়া বাঁচাইতে পারিতেন না, কিন্তু হিন্দু, চিকিৎসকেরা এইরূপ ব্যক্তিকে আরোগ্য করিয়া দিতে পারিতেন।” প্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক এরিয়ান (Arian) বলেন— “গ্রীকেরা অসুস্থ হইলে হিন্দু ব্রাহ্মণদিগের শরণাপন্ন হইতেন, ইঁহারা আশ্চর্য্য উপায়ে, এমন কি অমানুষিক উপায়ে চিকিৎসা-সাধ্য সমস্ত রোগই আরোগ্য করিয়া দিতেন।”

 খৃষ্টীয় প্রথম শতাব্দীতে গ্রীসের ডিওকরাইডিস (Dioscorides) একখানি ভেষজ পুস্তক প্রণয়ন করেন। প্রাচীন চিকিৎসা সম্বন্ধে তাঁহার এই পুস্তকেই বিস্তৃত বিবরণ পাওয়া যায়। ১৮৩৭ অব্দে লণ্ডন নগরস্থ কিংস্ কলেজের অধ্যাপক ডাক্তার রয়াল (Dr. Royle) হিন্দু চিকিৎসাশাস্ত্রের প্রাচীনত্ব আলোচনা করেন। তিনি তাঁহার প্রবন্ধে ডিওস্‌করাইডিসের গ্রন্থ আলোচনা করিয়া ইহাই প্রতিপন্ন করিয়াছেন যে, উক্ত গ্রীক গ্রন্থকার তাঁহার পূর্ব্ববর্ত্তী প্রাচীন হিন্দুগণের চিকিৎসাগ্রন্থ হইতে বহু তথ্য গ্রহণ করিয়াছেন।

 খৃঃ পূঃ ১৪০০ অব্দেও ভারতে চিকিৎসাশাস্ত্রের আলোচনা হইত