পাতা:বৌদ্ধ-ভারত.djvu/৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭২
বৌদ্ধ-ভারত

৫৫৫টি জাতক আছে অর্থাৎ ভগবান্ বুদ্ধ আপনার ৫৫৫টি পূর্ব্ব জন্মের কথা বলিয়া গিয়াছেন। সংস্কৃতে একখানি জাতকমালা আছে। সে খানি আর্য্যশূরের প্রণীত। ইহাতে ৩৪টি মাত্র জাতক আছে। এই পুস্তক হীনযানের কি মহাযানের বলিতে পারা যায় না। কেন না হীনযানের লোকেও সংস্কৃত লিখিত। মহাযানের লোকের কিন্তু জাতকের উপর তত আস্থা ছিল বলিয়া মনে হয় না। কারণ জাতকমালা ছাড়িয়া দিলে উহাদের আর জাতকের বই নাই। এই জাতকমালা আবার যখন মহাযানীরা পড়েন তখন উহার নাম হয় বোধিসত্ত্বাবদানমালা। মহাযানীরা আর্য্যশূরের জাতকমালা বুদ্ধের বচন করিয়া তুলিয়াছেন। মহাযানে তাহার নাম বোধিসত্ত্বাবদান বা বোধিসত্ত্বাবদানমালা। ইহা দেখিলে মনে হইবে যে, মহাযানীরা জাতক শব্দটা পছন্দ করিতেন না। উহারা জাতকের স্থলে অবদান শব্দ ব্যবহার করিতেন।”

 দান, শীল, প্রজ্ঞা, মৈত্রী প্রভৃতি পারমিতা সমূহের মাহাত্ম্য বর্ণনা করাই বৌদ্ধজাতকসমূহের উদ্দেশ্য। রায় সাহেব ঈশানচন্দ্র ঘোষ মহাশয় তৎপ্রণীত জাতকের দ্বিতীয় খণ্ডের বিজ্ঞাপনে লিখিয়াছেন— “বোধিসত্ত্ব কোনো জন্মে দান, কোনো জন্মে শীল, কোনো জন্মে প্রজ্ঞা, কোনো জন্মে মৈত্রী ইত্যাদি পারমিতার অনুষ্ঠান করিয়াছিলেন এবং সেই সঞ্চিত পুণ্যবলে তিনি অন্তিমকালে অভিসম্বুদ্ধ হইয়া পরিনির্ব্বাণ প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। বুদ্ধ-শিষ্যগণও স্ব-স্ব সাধ্যানুসারে এই সমস্ত পারমিতার অনুষ্ঠান করুন তাহা হইলে তাঁহারাও জন্ম-জন্মান্তরে উন্নতিলাভ করিয়া শেষে নির্ব্বাণলাভ করিতে পারিবেন। সরল ভাষায় এই তত্ত্ব ব্যাখ্যা করাই জাতকের উদ্দেশ্য।”

 জাতকের পাঠকগণ অবশ্যই জ্ঞাত আছেন যে, প্রত্যেক জাতকেরই তিনটি অংশ আছে। গৌতম বুদ্ধ কি জন্য, কোন প্রসঙ্গে আখ্যান বিবৃত করিয়াছেন জাতকের ভূমিকা অংশে তাহা বর্ণিত হইয়াছে, ইহাকে বর্ত্তমান কথা বলা হয়। দ্বিতীয় অংশে মূল জাতক বিবৃত