হইয়াছে ইহাকে অতীত বস্তু বলা হয়। তৃতীয় অংশে অতীত ঘটনার সহিত বর্ত্তমানের মিল দেখাইয়া “সমবধান” করা হইয়াছে।
রিসডেভিড্স তাঁহার বৌদ্ধ ভারত গ্রন্থে জাতকের ভূমিকাভাগ, আখ্যানঅংশ ও সমবধান বুঝাইয়া দিবার জন্য “ন্যগ্রোধমৃগ জাতক” সংক্ষেপে বর্ণনা করিয়াছেন।
ন্যগ্রোধ-মৃগজাতকের ভূমিকাভাগ অর্থাৎ বর্ত্তমান কথা এইরূপ:— ভগবান্ বুদ্ধ জেতবনে স্থবির কুমার কাশ্যপের জননী-সম্বন্ধে এইরূপ বলেন। কুমার কাশ্যপের মাতা রাজগৃহের কোনো ধনী শ্রেষ্ঠীর কন্যা। শৈশব হইতেই তিনি ভোগ-নিস্পৃহ ও ধর্ম্মপরায়ণা ছিলেন। বয়োবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তাঁহার ধর্ম্মানুরাগ বৃদ্ধি পাইতেছিল, তিনি মাতাপিতার অনুমতি লইয়া প্রব্রজ্যা গ্রহণের অভিলাষিণী হইলেন, কিন্তু, জনকজননী তাঁহাদের একমাত্র সন্তানের প্রস্তাবে সম্মত হইতে পারেন নাই। তাঁহারা বালিকাকে বিবাহ দিলেন। তাঁহার রূপেগুণে পতিগৃহে সকলে সন্তুষ্ট হইলেন কিন্তু তাঁহার মন হইতে বৈরাগ্য দূর হইল না।
এক উৎসবদিনে সকলে যখন বস্ত্রালঙ্কারে সুসজ্জিত হইয়াছিল তখন শ্রেষ্ঠীকন্যা সামান্য বেশেই ছিলেন। স্বামী ইহার কারণ জানিতে চাহিলেন। বালিকা বলিলেন, এই দেহ ক্ষণভঙ্গুর, ইহা দুঃখের আকর। স্বামী বলিলেন— তুমি যদি দেহকে এমন দোষযুক্ত মনে কর তাহা হইলে প্রবজ্যা গ্রহণ কর না কেন? স্ত্রী বলিলেন—স্বামিন, আপনার অনুমতি পাইলে আজই আমি প্রব্রজ্যা গ্রহণ করিতে পারি।
শ্রেষ্ঠীকন্যা দেবদত্তের স্থাপিত ভিক্ষুণীনিবাসে আশ্রয় পাইলেন। কিন্তু এই কন্যা যেদিন প্রব্রজ্যা গ্রহণ করেন সেই দিনই সসত্ত্বা ছিলেন, তাহা তাঁহার স্বামী কিংবা তিনি জানিতেন না। ক্রমে তাঁহার যখন গর্ভলক্ষণসমূহ প্রকাশ পাইল তখন দেবদত্ত বিনা অনুসন্ধানে তাঁহাকে তাড়াইয়া দিলেন। শ্রেষ্ঠীকন্যা জেতবন বিহারে ভগবান্ বুদ্ধের নিকট গমন করিলেন।