পাতা:বৌদ্ধ-ভারত.djvu/৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৬
বৌদ্ধ-ভারত

 রাজা কহিলেন,—মৃগরাজ, আপনি যে মৈত্রী, প্রীতি ও করুণার পরিচয় প্রদান করিলেন, তাহা ত মানুষের মধ্যে দেখা যায় না, আপনি উঠুন, আমি প্রসন্ন মনে আপনাকে ও সেই মৃগীকে অভয় দিলাম।

 মৃগরাজ বলিলেন—ইহাতে কেবল দুইটি মৃগ অভয় পাইল। রাজন্‌, অন্য মৃগদের ভাগ্যে কি হইবে?

 “তাহাদিগকেও অভয় দিলাম।”

 “আপনার উদ্যানবাসী,মৃগেরা অভয় পাইল, কিন্তু, অপর মৃগদের দশা কি হইবে?”

 “তাহাদিগকেও অভয় দিলাম।”

 “মৃগকুল নিস্তার পাইল বটে, অপর চতুষ্পদ জীবের ভাগ্যে কি ঘটিবে?”

 “তাহাদিগকেও অভয় দিলাম।”

 “চতুষ্পদ প্রাণীরা অভয় পাইল, কিন্তু, পাখীদের কি দশা হইবে?”

 “পাখীদিগকেও অভয় দিলাম।”

 “পাখীরা অভয় পাইল বটে, কিন্তু, মৎস্য ও অন্য জলচরদের দশা কি হইবে?”

 “মাছ ও অন্য জলচরদিগকে অভয় দিলাম।”

 এইরূপে সকল প্রাণীর জন্য অভয় আদায় করিয়া বোধিসত্ত্ব গণ্ডিকা হইতে মাথা তুলিলেন এবং রাজাকে পঞ্চশীল শিক্ষা দিলেন।

 গাভিণী হরিণী যথাকালে একটি পরম সন্দর শাবক প্রসব করিল। এই শাবক বড় হইয়া শাখামৃগের সহিত খেলিতে যাইত। তখন মাতা তাহাকে এই উপদেশ দিতেন,—তুমি শাখামৃগের সংসর্গে থাকিও না, তুমি এখন হইতেই ন্যগ্রোধমৃগের দলে মিশিবে।

 আখ্যান শেষ করিয়া ভগবান্ বুদ্ধ এই বলিয়া বক্তব্যের ‘সমবধান’ করিলেন—দেবদত্ত ছিল শাখামৃগ, তাহার শিষ্যগণ, শাখামৃগের অনুচের সকল, এই ভিক্ষুণী ছিলেন হরিণী, কুমার কাশ্যপ তাঁহার শাবক, তখন আনন্দ ছিলেন সেই রাজা এবং আমি ছিলাম ন্যগ্রোধমৃগ।