প্রথম অধ্যায়
বুদ্ধ ও বৌদ্ধশাস্ত্র
'
খৃষ্টপূর্ব্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে ভারতবর্ষের চিন্তারাজ্যে এক তুমল বিপ্লব ঘটিয়াছিল। বহু শতাব্দী ধরিয়া এদেশের হিন্দু আর্য্যগণ যে ক্রিয়াকর্ম্ম, আচারঅনুষ্ঠান নির্ব্বিচারে মানিয়া আসিতেছিলেন, কালক্রমে সেই সকল অনুষ্ঠান এমন প্রাণহীন ও নীরস হইয়া পড়িয়াছিল যে, সেগুলি আর কাহারও চিত্তে ধর্ম্মবোধের সঞ্চার করিত না। অত্যাশ্চর্য্য নৈসর্গিক শোভায় বিহ্বল হইয়া ঋগ্বেদের ঋষিগণ স্বাভাবিক ভক্তির উচ্ছ্বসে সরল বন্দনামন্ত্রে ইন্দ্র, বরণ, ঊষা প্রভৃতি যে দেবতাগণের আরাধনা করিয়াছেন, তখনও সেই দেবতাগণের নাম উচ্চারিত হইত বটে, কিন্তু, সেই নাম তখন কাহারও হৃদয়যন্ত্রে ভক্তিতারে ঝঙ্কার দিত না। এই সকল ঋষির বংশধরগণই বাহির হইতে চাপ পাইয়া নানা প্রয়োজনের তাগিদে আপনাদের কর্ম্ম বিভাগ করিয়া নানা বর্ণের সৃষ্টি করিয়া ফেলিলেন। কালে কালে সেই ভাগবিভাগ জাতিভেদের সৃষ্টি করিল। ঋষিদের বংশধরগণের এক দল হইলেন ব্রাহ্মণ; ক্লিয়াকর্ম্ম যাগযজ্ঞ ধ্যানধারণাই তাঁহাদের ব্যবসায় হইল। ইহাতে কোনও সফল ফলে নাই এমন কথা বলা যায় না। কিন্তু, কালক্রমে এই প্রথায় লোকের মনে এই বোধ জন্মিল যে, যাজক পুরোহিতই তাহাদের প্রতিনিধি হইয়া ভগবানকে ডাকিবেন, ব্যক্তিগত ক্লেশ স্বীকার করিয়া