দুরূহ সন্দেহ নাই। কারণ, পাটের চাষ সম্বন্ধে কোনো দিন কোনে। কথাই বলি নাই।
জ্ঞানপ্রকাশ বলিতেছেনঃ—“লেখার ভাবে আভাসে বোধ হয় বালবিধবার দুঃখে লেখক আমাদের কাঁদাইবার চেষ্টা করিয়াছেন—কাঁদা দূরে যাক্, প্রথম হইতে শেষ পয্যন্ত আমরা হাস্য সম্বরণ করিতে পারি নাই।”
হাস্য সম্বরণ করিতে না পারার জন্য আমি সম্পূর্ণ দায়ী কিন্তু তিনি অকস্মাৎ আভাসে যাহা বুঝিয়াছিলেন তাহ সম্পূর্ণ নিজগুণে। সম্মার্জনী নামক সাপ্তাহিকপত্রে লিখিয়াছেন:—"হরিহরপুরের ম্যুনিসিপালিটির বিরুদ্ধে গোবিন্দবাবুর যে সুগভীর প্রবন্ধ প্রকাশিত হইয়াছে তাহা প্রাঞ্জল ও ওজস্বী হইয়াছে সন্দেহ নাই কিন্তু একটি বিষয়ে দুঃখিত ও আশ্চর্য্য হইলাম, ইনি পরের ভাব অনায়াসেই নিজের বলিয়া চালাইয়াছেন। এক স্থলে বলিয়াছেন “জন্মিলেই মরিতে হয়”—এই চমৎকার ভাবটি ঘদি গ্রীক পণ্ডিত সক্রেটিসের গ্রন্থ হইতে চুরি না করিতেন তবে লেখকের মৌলিকতার প্রশংসা করিতাম। নিম্নে আমরা কয়েকটি চোরাই মালের নমুনা দিতেছিঃ–গিবন্ বলিয়াছেন ‘রাজ্যে রাজা না থাকিলে সমূহ বিশৃঙ্খলা ঘটে’,—গোবিন্দ লিখিয়াছেন ‘একে অরাজকতা তাহাতে অনাবৃষ্টি— গণ্ডস্যোপরি বিস্ফোটকং।’ সংস্কৃত শ্লোকটিও কালিদাস হইতে চুরি!
রাস্কিনে একটি বর্ণনা আছে ‘আকাশে পূর্ণচন্দ্র উঠিয়াছে—সমুদ্রের জলে তাহার জ্যোৎস্না পড়িয়াছে।’ গোবিন্দবাবু লিখিয়াছেন—‘পঞ্চমীর চাঁদের আলো রামধনবাবুর টাকের উপর চিক্চিক্ করিতেছে।’ কী আশ্চর্য্য চুরি! কী অদ্ভুত প্রতারণা!! কী অপূর্ব্ব দুঃসাহসিকতা!!!
সংবাদসার বলেন “রামধনবাবুধে নেউগিপাড়ার শ্যামাচরণ ত্রিবেদী তাহাতে সন্দেহ নাই! শ্যামাচরণবাবুর টাক নাই বটে কিন্তু আমরা সন্ধান লইয়াছি তাঁহার মধ্যম ভ্রাতুষ্পুত্রের মাথায় অল্প অল্প টাক পড়িতে আরম্ভ করিয়াছে। এরূপ ব্যক্তিগত উল্লেখ অতিশয় নিন্দনীয়।”