পাতা:ব্যবসায়ী - মহেশচন্দ্র ভট্টাচার্য্য.pdf/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> ケ ব্যবসায়ী । কন্যা বুঝিল যে, তাহার শ্বশুর দ্রব্যাদি সংরক্ষণে কৃপণ হইলেও আবশ্যকীয় ব্যয়ের সময় জমিদার অপেক্ষাও অধিকতর মুক্তহস্ত। অনেক সময় দেখা যায় যে অমিতব্যয়ী প্ৰতিবাসীর দৃষ্টান্তে মিতব্যয়ী ব্যক্তিও আয় অপেক্ষা অধিক ব্যয় করিয়া ফেলেন। এই সব ক্ষেত্রে প্রায়ই আর্থিক অবস্থানভিজ্ঞ স্ত্রীপুত্রের অভিলাষ পূর্ণ করিতে যাইয়া এইরূপ বিপদ ঘটিয়া থাকে। দৃষ্টান্তস্বরূপ বলিতেছি। অল্প বেতনভোগী অথচ অমিতবায়ী ও দূরদৃষ্টিবিহীন প্ৰতিবাসিগণ তাঁহাদের স্ব স্ব স্ত্রীপুত্ৰকে অনাবশ্যকীয় মনোরঞ্জক ও অল্পকালস্থায়ী দ্রব্যাদি ক্রয় করিয়া দিতেছে দেখিলে অধিক আয়শীল অথচ মিতব্যয়ী ব্যক্তির স্ত্রী পুত্রেরা উক্তবিধ দ্রব্যাদি ক্রয় করিয়া দিতে গৃহস্বামীকে অনুরোধ ও আবশ্যক হইলে অনুযোগও করিয়া থাকেন । এ সব ক্ষেত্রে টাকা হাতে রাখিয়া স্ত্রী পুত্রের ইচ্ছার বিপরীতে কাৰ্য্য করা অত্যন্ত কঠিন । এইরূপ অপব্যয় হইতে সাবধান না তইতে পারিলে অর্থসাচ্ছল্য হয় না এবং দুঃখ পাইতে ভয় । উপাৰ্জনকারী ব্যবসায়ে বা অন্যরূপে যত ধনই উপাৰ্জন করুক না কেন, মিতব্যয়ী না হইলে তাহার কখনও অর্থসাচ্ছল্য হয় না । আয় অপেক্ষা বেশী ব্যয় করা কখনও উচিত নহে, কষ্ট সহ করা উচিত, কিন্তু ঋণ করা উচিত নহে। বিশেষতঃ যে ঋণ পরিশোধ করিবার ক্ষমতা নাই, সেইরূপ ঋণ ও চুরি প্রায় একই কথা । যে ঋণ পরিশোধ করিবার সাধ্য নাই, সেই ঋণ যদি বন্ধুগণ কৃপাপরবশ হইয়া কোনও কঠিন রোগের বিশেষ আশাপ্ৰদ চিকিৎসার জন্য দানস্বরূপ প্ৰদান করেন তাহা হইলে ইহা গ্ৰহণ করা অন্যায় নহে। কখনও সক্ষম হইলে ঋণ শোধ করা যাইবে, তাহা না হইলেও সামাজিক অন্যায় বা পাপের কারণ নাই। কিন্তু বিবাহ এবং শ্ৰাদ্ধাদির জন্য ঋণ করা অত্যন্ত অন্যায়, কারণ হিন্দু শাস্ত্ৰকারকগণ নির্দেশ করিয়াছেন যে ঋণশোধ দেওয়া ব্যতীত ঋণ পাপের প্ৰায়শ্চিত্ত নাই ৷ {