পাতা:ব্রজবিলাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় উল্লাস।
১৩

কিছু শিখিয়াছি। আপনি যদি পণ্ডিত বলিয়া পরিচয় দিতে পারেন, আমিও পারি। কিন্তু, ওরূপ পরিচয় দেওয়া দুরে থাকুক, যদি কেহ আমাকে ব্রাহ্মণ পণ্ডিত ভাবে, তাহাতে আমার যৎপরোনান্তি অপমান বোধ হয়। বলিতে কি, আপনাদের আচরণের জন্যে, ব্রাহ্মণজাতির মান একবারে গিয়াছে। আর আপনাকার বিদ্যাপ্রকাশের প্রয়োজন নাই; যথেষ্ট হইয়াছে; স্বস্থানে প্রস্থান করুন। এই বলিয়া, বিদ্যাসাগর তাঁহাকেও তাঁহার সমভিব্যাহারী মহাশয়দিগকে বিদায় করিয়া দিলেন। আমরাও সকলে, দেখিয়া শুনিয়া, অবাক্ হইয়া, চলিয়া গেলাম।

 নবদ্বীপ এ দেশের সর্ব্বপ্রধান সমাজ; বিদ্যারত্ন সেই সর্ব্বপ্রধান সমাজের সর্ব্বপ্রধান স্মার্ত বলিয়া গণ্য ও মান্য; তাঁহার চাঁদমুখে স্বকর্ণে শুনিলাম, ব্যবস্থা দিবার সময়, বচন ফচন দেখা যায় না। জানকীজীবন ন্যায়রত্ন যথাশাস্ত্র ব্যবস্থা দিয়াছিলেন। বিদ্যারত্ন খুড় পূর্ব্বে ঐ ব্যবস্থায় নাম স্বাক্ষর করিয়াছেন; কিন্তু, অপর পক্ষের নিকট হইতে, পছন্দসই তৈলবট হস্তগত করিয়া, আজ আবার ঐ ব্যবস্থা অব্যবস্থা বলিয়া প্রতিপন্ন করিতে প্রবৃত্ত। এ দেশের মুখে ছাই; এ দেশের সর্ব্বপ্রধান সমাজের মুখে ছাই; এ দেশের সর্ব্বপ্রধান সমাজের সর্ব্বপ্রধান স্মার্ত্তের মুখে ফুল চন্দন। যাঁহাদের এরূপ ব্যবহার, তাঁহাদের সহিত কিরূপ ব্যবহার করা উচিত ও আবশ্যক, এ হতভাগা দেশের হতভাগা লোকের সে বোধও নাই, সে বিবেচনাও নাই।

ইতি শ্রীব্রজবিলাসে মহাকাব্যে কস্যচিৎ উপযুক্ত ভাইপোস্য কৃতৌ

দ্বিতীয় উল্লাসঃ