পাতা:ব্রজবিলাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় উল্লাস।
১৭

হইয়া, খুড় মহাশয় উত্তর দানে বিমুখ হন, দুও দুও বলিয়া, হাততালি দিয়া, ইয়ারবর্গ লইয়া, কিয়ৎ ক্ষণ, আনন্দ মৃত্য করিব পরে, রীতিমত বিচারে প্রবৃত্ত হইয়া, মড় মড় করিয়া, খুড়র ঘাড় ভাঙিয়া ফেলিব।

 যদি বলেন, খুড়র ঘাড় ভাঙিলে, খুড় মরিয়া যাইবেন। তাহার উত্তর এই, খুড়র ঘাড় বড় মজবুদ, সহজে ভাঙে, কার সাধ্য। আর, যদি ভাঙিয়াই যায়, তাহাতে আমি নাচার। আমি মনকে বুঝাইব, খুড়র কপালে লেখা ছিল, উপযুক্ত ভাইপোর হস্তে সদগতি হইবেক, তাহাই ঘটিয়াছে; বিধিনির্ব্বন্ধ অতিক্রম করে, কার সাধ্য। আর, ইহাও বুঝিয়া দেখা আবশ্যক, যদি, ভাগ্য ক্রমে, উপযুক্ত ভাইপোর চেষ্টা ও যত্নে, খুড়র সদগতিলাভ হয়, তাহাতে উতয়েরই প্রশংসা, উভয়েরই জন্ম সার্থক। যদি বলেন, খুড়র ঘাড় ভাঙ্গিলে তোমার পাপ জন্মিবে। তাহার উত্তর এই, পাপের জন্য আমার তত দুর্ভাবনা নাই। এ দেশে কোন কর্ম্ম করিলে, পাপস্পর্শ বা জাতিপাত ঘটিয়া থাকে। ছেলে ৰেলায়, ব্রাহ্মণ পণ্ডিতের এবং পবিত্র-সাধুসমাজের বিচক্ষণ বহুদর্শা চাঁই মহোদেয়দিগের মুখে, কখনও কখনও শুনিতাম, অপেয়পানে, অতক্ষভক্ষণে, অগম্যাগমনে পাপম্পৰ্শ ও জাতিপাত হয়। এখন, সে সকল কথা ভণ্ডামি বা প্রতারণা, অথবা মিছা ভয় দেখান বা পরিহাস করা মাত্র বোধ হইতেছে। পাপজনক রা জাতিপাতকর হইলে, এ দেশের বিশুদ্ধ সাধুসমাজে, ঐ সকল কর্ম্মের অনুষ্ঠান বা অনুমোদন চর্ম্মচক্ষে দেখা যাইত না। সচরাচর