পাতা:ব্রজবিলাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় উল্লাস।
১৯

বিধান আছে। যদি স্পষ্ট বিধান না থাকে, বিদ্যাবাগীশ খুড় মহাশয়েরা চিরঞ্জীবী হউন, মনের মত তৈলবট সামনে ধরিলে, তাঁহারা একবারে অসামাল ও দিগ্বিদিক‍্জ্ঞানশূন্য হইয়া পড়িবেন, এবং প্রফুল্ল চিত্তে, হয় বচন গড়িয়া, নয় মজুদ বচনের ঘাড় ভাঙিয়া, অম্লান বদনে, নিখরকিচ ব্যবস্থা লিখিয়া দিবেন; তাহা হইলেই, সাধুসমাজে আর কোনও ওজর আপত্তি থাকিবেক না।

 এ স্থলে উল্লেখ করা নিতান্ত আবশ্যক, ‘এ দেশে কোন কর্ম্ম করিলে; পাপস্পর্শ ও জাতিপাত হইয়া থাকে’, ইতিপূর্ব্বে, সামান্যকারে, এই যে নির্দ্দেশ করিয়াছি, তাহা প্রকৃত প্রস্তাবে ঠিক হয় নাই। কারণ, বিধবা বিবাহ দিলে, বিধবা বিবাহ করিলে, অথবা বিধবাবিবাহের সংশ্রবে থাকিলে, পাপস্পর্শ ও জাতিপাত হইয়া থাকে। এজন্যই, তাদৃশ ব্যক্তিরা পবিত্র সাধুসমাজে পরিগৃহীত হইতেছে না। সাধুসমাজ কাহাকে বলে, ঘটকচূড়ামণি শ্রীমান্ জনমেজয় বিদ্যাবাগীশ খুড়কে জিজ্ঞাসা করিলে, সবিশেষ জানিতে পারিবেন। যদি বলেন, ইনি কে। ইনি এক্ষণে শ্রীমতী যশোহরহিন্দুধর্ম্মরক্ষিণী সভা দেবীর এক প্রধান নায়ক। আগে, ইঁহাকে, এক জন আধকামারিয়া উকীল বলিয়া জানিতাম; এখন দেখিতেছি, ইনি সর্ব্ব শাস্ত্রের অদ্বিতীয় ভূঁইফোঁড় মীমাংসাকর্ত্তা; শ্রীমান্ ব্রজনাথ বিদ্যারত্ন, তথা শ্রীমান্ ভুবনমোহন বিদ্যারত্ন, তথা শ্রীমান্ রামধন তর্ক পঞ্চানন প্রভৃতি প্রসিদ্ধ প্রাচীন খুড় মহাশয়েরা আর ইঁহার কাছে কলিকা পান না।