পাতা:ব্রজবিলাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৮
ব্রজবিলাস।

বিদ্যাবাগীশ খুড় মহাশয়দের মনোগত অভিপ্রায় কি, এ পর্যন্ত, কেহ তাহা স্থির বুঝিতে পারেন নাই। তাহার কারণ এই, শ্রীমান খুড় মহাশয়েরা নিতান্ত নিরীহ জন্তু; যাহাদিগকে, সর্ব্ব সময়ে, সর্ব্ব বিষয়ে, সাধুসমাজের ক্রীত দাসের ন্যায়, চলিতে ও বলিতে হয়; কোনও বিষয়ে, স্বতঃপ্রবৃত্ত হইয়া, অভিপ্রায় প্রকাশ করা তাঁহাদের ইচ্ছা, ক্ষমতা, ও ব্যবসায়ের বহির্ভুত।

 এক বড় মানুষের কতকগুলি উমেদার ছিলেন। আহার প্রস্তুত হইলে, বাবু, পার্শ্ববর্ত্তী গৃহে গিয়া, আহার করিতে বসিলেন; উমেদারেরাও, সঙ্গে সঙ্গে, তথায় গিয়া, বাবুর আহার দেখিতে লাগিলেন। নুতন পটোল উঠিয়াছে। পটোল দিয়া মাছের ঝোল করিয়াছে। বাৰু দুই চারি খান পটোল খাইয়া বলিলেন, পটোল অতি জঘন্য তরকারি বোলে দিয়া, ঝোলটাই খারাপ করিয়াছে। ইহা শুনিয়া, উমেদারেরা বিস্ময়াপন্ন হইয়া কহিলেন, কি অন্যায়! আপন কা্র ঝোলে পটোল!! পটোল ত ভদ্র লোকের খাদ্য নয়। কিন্তু, ঝোলে যত গুলি পটোল ছিল, বাৰু ক্রমে ক্রমে সকল গুলিই খাইলেন, এবং বলিলেন, দেখ, পটোলটা তরকারি বড় মন্দ নয়। তখন উমেদারের কহিলেন, পটোল তরকারির রাজা; পোড়ান, ভাজুন, সুক্তায় দেন, ডালনায় দেন, চড়চড়িতে দেন, ঝোলে দেন, ছোকায় দেন, দম্ করুন, কালিয়া করুন, সকলেই উপাদেয় হয়; বলিতে কি, এমন উৎকৃষ্ট তরকারি আর নাই। বাবু কহিলেন, তোমরা ত বেস লোক; যেই আমি বলিলাম, পটোল ভাল তরকারি