পাতা:ব্রজবিলাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিজ্ঞাপন।

চতুর, চালাক, বিশ্বস্ত বন্ধুবিশেষ দ্বারা, তাঁহার নিকট ঐরূপ জিজ্ঞাসা করাইব। দেখি, তিনি, পুর্ব্বোক্ত মহোদয়ের মত, ঈষৎ হাসিয়া, মৌনাবলম্বন করিয়া থাকেন; অথবা, আমার লিখিত নয় বলিয়া, স্পষ্ট বাক্যে উত্তর দেন। যেরূপ শুনিতে পাই, তাহাতে তিনি, “না বিইয়া কানাইর মা” হইতে চাহিবেন, সে ধরনের জন্তু নহেন।

 অধিকন্তু, তিনি, ভাল লেখক বলিয়া, এক সময়ে, বিলক্ষণ প্রতিষ্ঠালাভ করিয়াছিলেন, সত্য বটে। কিন্তু, যে অবধি, আমি প্রভৃতি কতিপয় উচ্চ দরের লেখকচূড়ামণি, সাহিত্যরঙ্গভূমিতে অবতীর্ণ হইয়া, নানা রঙ্গে, অভিনয় করিতে আরম্ভ করিয়াছি, সেই অবধি, তাঁহার লেখার আর তেমন গুমর নাই। ফলকথা এই, তিনি প্রভৃতি প্রাচীন দলের লেখকদিগের ভোঁতা কলমের খোঁতা মুখ হইতে, এবংবিধ রঙ‍্দার মহাকাব্য নিঃসৃত হওয়া, গোময়কুণ্ডে কমলোৎপত্তির ন্যায়, কোনও মতে সম্ভব নহে।

 যথাবিহিত যাহা অভিহিত হইল, ইহাতে যদি প্রাচীন দলের অভিমানী লেখক মহোদয়েরা রাগ করেন, করুন। আমার হাতে কিছুই বহিয়া যাইবেক না। আমি, এ সকল বিষয়ে, কাহারও তুআক্কা রাখি না, ও রাখিতেও চাহি না। এ জন্যে, যদি আমায় নরকে যাইতে হয়, আমি তাহাতেও পিছপাঁও নই।

 যদি বলেন, নরক কেমন সুখের স্থান, সে বোধ থাকিলে, তুমি, কখনই, নরকে যাইতে চাইতে না। এ বিষয়ে বক্তব্য এই, কিছু দিন পুর্ব্বে, কলিকাতায়, এক ভদ্রসন্তান বেয়াড়া ইয়ার হইয়াছিলেন। তিনি এক বারে উচ্ছন্ন যাইতেছেন ভাবিয়া, তাঁহার গুরুদেব, উপদেশ দিয়া, তাঁহাকে দুরস্ত করিবার চেষ্টা পাইয়াছিলেন। ‘তোমার কি নরকে যাইবার ভয় নাই’, গুরুদেব এই কথা বলিলে, সেই সুবোধ, সুশীল, বিনয়ী ভদ্রসন্তান কহিয়াছিলেন, 'আপনি দেখুন, যত প্রবলপ্রতাপ রাজা রাজড়া, সব নরকে যাইবেন; যত ধনে মানে পুর্ণ বড় লোক, সব নরকে যাইবেন; যত দিলদরিয়া,