পাতা:ব্রাহ্মণ-রোমান-ক্যাথলিক-সংবাদ - দোম আন্তোনিও দো রোজারিও.pdf/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রস্তাবনা
২৴৹

নবদ্বীপ অথবা অক্সফোর্ড বলা যাইতে পারে। তাভোরা-বংশের প্রাচীন প্রাসাদ এখনও এভোরা সহরে বিদ্যমান। এই বংশের নাম ভারতবর্ষের ইতিহাসেও একেবারে অজ্ঞাত নহে। ফ্রান্সিসকো দা তাভোরা আলবুকার্কের অধীনে কার্য্য করিয়াছেন। রুই লরেন্সো দা তাভোরা ১৬০৯ হইতে ১৬১২ খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত পর্ত্তুগীজ-ভারতের গভর্নর ছিলেন। ১৬৮১ খ্রীষ্টাব্দ হইতে ১৬৮৬ খ্রীষ্টাব্দ পর্য্যন্ত আর এক ফ্রান্সিসকো দা তাভোরা পর্ত্তুগীজ-ভারতের রাজ প্রতিনিধির পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তাঁহার সময়েই মারাঠা বীর শিবাজীর পুত্র শাম্ভাজী পর্ত্তুগীজ রাজ্য আক্রমণ করিয়া তাঁহাদিগকে ব্যতিব্যস্ত করিয়া তুলিয়াছিলেন। পম্বালের আমলে রাজদ্রোহের অভিযোগে যে তাভোরার ডিউকের শিরশ্ছেদ হইয়াছিল, তাঁহার সহিত আর্চ্চবিশপ মিগেলের কোন নিকট সম্পর্ক থাকা অসম্ভব নহে।

 এখন দেখা যাউক দোম আন্তোনিয়োর গ্রন্থ কেমন করিয়া কি সূত্রে মানুয়েল দা আসুম্পসাঁও ও জর্জ দা আপ্রোজেতন্তাসাওঁর মারফতে পর্ত্তুগালে পৌঁছিল। আসুম্পসাঁও ১৭৩৪ খ্রীষ্টাব্দে ভাওয়াল পরগনার নাগরীর সত্ত নিকোলাস তলেন্তিনো মিশনের পরিচালক ছিলেন। প্রচলিত প্রবাদ এবং ১৭৫০ খ্রীষ্টাব্দের শেষভাগে ফাদার আম্ব্রোসিয়ো দে সন্ত আগুস্তিনো-লিখিত বিবরণ বিশ্বাস করিলে দোম আন্তোনিয়োই এই মিশনের প্রতিষ্ঠাতা। ফাদার আম্ব্রোসিয়ো ১৭২৬ খ্রীষ্টাব্দে ভাওয়ালে প্রচারকার্য্য আরম্ভ করেন। সেই সময়ে তিনি দোম আন্তোনিয়োর পুথি দেখিয়াছিলেন। যিশনের একজন পাদ্রী ব্রাহ্মণদিগের সহিত বিচার করিবার অভিপ্রায়ে এই পুথির পর্ত্তুগীজ অনুবাদ করিয়াছিলেন। মানুয়েল কবে নাগরীতে আসেন তাহা জানা না থাকায় তিনিই ফাদার আম্ব্রোসিয়োর পত্রে উল্লিখিত ধর্ম্মযাজক কিনা বলা যাইতেছে না। কিন্তু ইহা সহজেই অনুমান করা যাইতে পারে যে নাগরীর মিশন-কেন্দ্রে দোম আন্তোনিয়োর পুথির বহুল ব্যবহার ছিল এবং অন্যান্য খ্রীষ্টান প্রচারকদিগের কার্য্যে লাগিবে বলিয়া তিনি জর্জ দা আপ্রেজেন্তাসাওঁর মারফতে উহা পর্ত্তুগালে মুদ্রণের অভিপ্রায়ে পাঠাইয়া থাকিবেন। যে কোন কারণে হউক জর্জ দা আপ্রেজেন্তাসাঁও এক সঙ্গে তিনখানি বাঙ্গালা বই ছাপিবার ব্যবস্থা করিতে পারেন নাই। মানুয়েলের বই দুইখানির পাণ্ডুলিপি প্রস্তুত হইবার আট বৎসর পরে ছাপা হইয়াছে[১] আর আন্তোনিয়োর পুস্তক অমুদ্রিতই রহিয়া গিয়াছে। এই জন্যই আমরা

  1. “ক্রেপার শাস্ত্রের অর্থভেদ”-সম্বন্ধেই এই মন্তব্য প্রকৃত পক্ষে প্রযোজ্য, তবে অনুমান হয় যে ব্যাকরণ এবং শব্দকোষের পাণ্ডুলিপিও ঐ সময়েই প্রস্তুত হইয়া থাকিবে।