পাতা:ব্রাহ্মণ-রোমান-ক্যাথলিক-সংবাদ - দোম আন্তোনিও দো রোজারিও.pdf/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৸৹
ব্রাহ্মণ-রোমান-ক্যাথলিক-সংবাদ

পাইতেছি। তুলনা করিবার সময়ে আমরা এখন “হইতে” শব্দের ব্যবহার করি, ৪৫ ও ৪৬ পৃষ্ঠায় “হইতের” পরিবর্ত্তে “করিতে” পাওয়া যায়; যথা—“তিনি কি প্রতিবীর রাজারে করিতেও অধোম”, “আর আর যতো অবোতার কহিয়াছো তাহারে করিতে কৃষ্ণো বিস্তর কার্য্যো করিয়াছেন অসম্ভব্য।” দুই-এক স্থানে কর্ত্তৃকারকে “তে” ও “এ”-র ব্যবহার দেখা যায়, যেমন ২৬ পৃষ্ঠায় “ভালো প্রথিবী কোথাএ ছিলো যে বরাহোতে উধার করিলেন?” ৩৫ পৃষ্ঠায়—“শিবে ও বাসে (ব্যাসে)ও দেখিয়াছে।” অপর পক্ষে “প্রথিবী তল যায়” (পৃঃ ২২), “যতো কথা কহো এ অলড়” (পৃঃ ২৮), “তোমার পরোমার্থে নি লএ এ বিচার” (পৃঃ ৫), “এখোন থাউক” (পৃঃ ২৭), “বিচারে যে ঠাওর হএ” (পৃঃ ৪৭) প্রভৃতি বাক্য পূর্ব্ববঙ্গের কথিত ভাষায় এখনও প্রচলিত। দোম আন্তোনিয়ো সেকালের রীতি অনুসারে দ্বিতীয়া বিভক্তিতে “কের” পরিবর্ত্তে সাধারণতঃ “রে”-র ব্যবহার করিয়াছেন, কিন্তু দুই-এক জায়গায় ইহার অন্যথা হইয়াছে। ৬৩ পৃষ্ঠায় পরাৎপরেক”, ৬৫ পৃষ্ঠায় “জনেক” এবং ৬৭ পৃষ্ঠায় “ব্রমের্ক” পাইতেছি। এখনও পাবনা জেলার অনেক জায়গায় “আমাদিগকে” এবং “তাহাদিগকে” না বলিয়া “আমাদেক” ও “তাদেক” বলে। পুথির প্রথম পৃষ্ঠায় আমি শব্দের সম্বন্ধপদে বহুবচনে এক জায়গায় “আমারদিগের” স্থলে “আমারগোর” আছে। আসুম্পসাঁওর ব্যাকরণে আছে “আমারগো বা আমারদিগের”। কেরির ব্যাকরণে “আমারদিগের, আমারদের” পাই, “আমারগো” নাই। পূর্ব্ববঙ্গে কিন্তু এখনও “আমাগো”, “আমারগো”, “আমাগোর” প্রভৃতি প্রচলিত। আন্তোনিয়োর গ্রন্থ হইতে প্রমাণিত হইতেছে যে পূর্ব্ববঙ্গের ভাষায় বাঙ্গালার প্রাচীন রূপ এখনও কিয়ৎ পরিমাণে অব্যাহত আছে। এভোরার পুথিতে “যেখান হইতে” অর্থে “যেখানে থাকিয়া” (পৃঃ ৪৬), “তাহা হইতে” অর্থে “তাহাতে থাকিয়া” (পৃঃ ৩০), “তল হইতে” অর্থে “তলে থাকিয়া” (পৃঃ ১৮) এবং “লঙ্কা হইতে” অর্থে “লঙ্কাতে থাকিয়া” (পৃঃ ৩৭) পাইতেছি। ইহার সহিত পূর্ব্ববঙ্গের “যেথান থিকা”, “তাত্থিকা”, “তলেত্থিকা”, “লঙ্কাত্থিকা” তুলনীয়। ৪৪ পৃষ্ঠার “পুরোস্তাপ” এখনও কৃষকদিগের ভাষায় “প্রস্তাবে”র পরিবর্ত্তে ব্যবহৃত হয়। “আইয়ো”, “সেইয়া”, “চৌগুরা”, “অকুমারী”, “অনাশ্চর্য্য”, “দাবরাইয়া”, “দৈস্যো”, “ঠেক”, “পৃকৃতি”, “ক্রোদো” “যোথাএ”, “মঞ্চো” (মর্ত্ত্য অর্থে) “কেমতে”, ‘হেও’ (সেও অর্থে’) প্রভৃতি শব্দ এখনও পূর্ব্ববঙ্গে সচরাচর শ্রুত হয়।

 স্থানান্তরে বলিয়াছি যে এভোরার পুথিতে বাঙ্গালার পর্ত্তুগীজ অনুবাদ সর্ব্বদা মূলানুগত