পাতা:ব্রাহ্মণ-রোমান-ক্যাথলিক-সংবাদ - দোম আন্তোনিও দো রোজারিও.pdf/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রস্তাবনা
২৸৴৹

হয় নাই। ইহার প্রমাণস্বরূপ দুইটি দৃষ্টান্ত উদ্ধৃত করিলেই চলিবে। প্রথম পৃষ্ঠায় ব্রাহ্মণ রোমান ক্যাথলিককে বলিতেছেন,— “ইহাতে তোমারদিগের শাস্ত্রে অপরিণাম নাহি?” পর্ত্তুগীজ অংশে লেখা আছে—logo & vossa lei não he bõa. অর্থাৎ তবে তোমাদিগের রীতি (বা শাস্ত্র) ভাল নহে। ৬৬ পৃষ্ঠায় ব্রাহ্মণ ক্যাথলিককে প্রশ্ন করিতেছেন,—“তোমারদিগের শাস্ত্রে নি কহো যে কলকীশো অবতার হইবে?” ক্যাথলিকের উত্তর,—“হত্র ক্রেপার শাস্ত্রে লিখিয়াছে।” ইহার পর্ত্তুগীজ অনুবাদে আছে—Sim, nos ta’be dissemos q ha de vir coloquixo a quem chamamos Antecrysto—হাঁ, আমরাও কহি যে কল্কীশো আসিবেন তাহাকে আমরা খ্রীষ্টবৈরী (Antichrist) কহিব। পাদ্রী আসুম্পসাঁও দোম আন্তোনিয়োর গ্রন্থের ভাবানুবাদ করিয়াছেন, মূলানুগত ভাষান্তর করেন নাই। সুতরাং যেখানে গ্রন্থের কোন শব্দের অর্থ-সম্বন্ধে আমাদের সংশয় উপস্থিত হয় সেখানে পর্ত্তুগীজ অনুবাদে প্রায়ই প্রকৃত প্রতিশব্দ খুজিয়া পাওয়া যায় না।

 দোম আন্তোনিয়ো হিন্দুধর্ম্মের অসারতা প্রতিপন্ন করিবার জন্য পুস্তক লিখিয়াছিলেন; কিন্তু হিন্দুধর্ম্মের প্রকৃত তত্ত্ব তিনি উপলব্ধি করিতে পারিয়াছিলেন বলিয়া মনে হয় না। বোধ হয় তাঁহার শাস্ত্রজ্ঞানও খুব গভীর ছিল না। তিনি প্রথম দশাবতারের কথা আলোচনা করিয়াছেন, তারপর কৃষ্ণের চরিত্রপ্রসঙ্গ উত্থাপন করিয়াছেন। ইহার পরে আসিয়াছে ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বরের কথা, তারপর ক্ষীরোদশায়ী ভগবান্, আদ্যাশক্তি, মধুকৈটভ প্রভৃতির উপাখ্যান আলোচনা করিয়া তিনি তীর্থজলে স্নান প্রভৃতি নৈষ্ঠিক হিন্দুর আচরণীয় কর্ম্মের অযৌক্তিকতা প্রদর্শন করিয়াছেন। গ্রন্থের সমাপ্তি অত্যন্ত আকস্মিক। “আর তীর্থো কারে কহো তাহা বুঝাই” বলিয়া আর প্রসঙ্গান্তর উত্থাপন করা হয় নাই।

 দোম আন্তোনিয়োর পুস্তকে গুটিকয়েক সুপরিচিত সংস্কৃত শ্লোক আছে। কিন্তু তাহার সংস্কৃতে বিশেষ দখল ছিল কিনা সন্দেহ। পৌরাণিক যে কাহিনীগুলি তিনি আলোচনা করিয়াছেন তাহা প্রায় সকল হিন্দুই জানে। “জানামি ধর্ম্মং”, মোহমুদ্গরের শ্লোক, “তেজীয়সাং ন দোষায়”, “বলিরে ছলিতে প্রভু হইলা বামন”, প্রভৃতি কথা জানিবার জন্য শাস্ত্রজ্ঞানের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু পৌরাণিক উপাখ্যান বলিতে গিয়া তিনি যে সমস্ত ভুল করিয়াছেন তাহা হইতে স্পষ্টই প্রতীয়মান হইবে যে মহাকাব্য বা পুরাণ-গ্রন্থের সহিত প্রত্যক্ষ পরিচয় তাঁহার ছিল না।

 প্রথম বিষ্ণুর দশাবতারের কথা ধরা যাক। ভাগবতমতে অবতার অসংখ্য,—