পাতা:ব্রাহ্মণ-রোমান-ক্যাথলিক-সংবাদ - দোম আন্তোনিও দো রোজারিও.pdf/৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৸৵৹
ব্রাহ্মণ-রোমান-ক্যাথলিক-সংবাদ

“অবতারাহসংখ্যেয়াঃ”। এক সময়ে ব্যাস, দত্তাত্রেয়, কৃষ্ণ বাসুদেব প্রভৃতি বিষ্ণুর অবতার বলিয়া পরিগণিত হইতেন। বোধ হয় জয়দেবের পরে বাঙ্গালা দেশে বিষ্ণুর অসংখ্য অবতারের মধ্যে মাত্র দশটি বিশেষ প্রাধান্য লাভ করেন। দোম আন্তোনিয়োও দশ অবতারের কথা বলিয়াছেন,—“কৃষ্ণ বাসুদেব অবতার নহেন— কারণ কৃষ্ণন্তু ভগবান্ স্বয়ম্। দোম আন্তোনিয়োর তালিকায় স্থান পাইয়াছেন—মৎস্য, কূর্ম্ম, বরাহ, নৃসিংহ, বামন (দোম আন্তোনিয়োর মতে ব্রামণ), পরশুরাম, বলরাম, ক্বপ, শ্রীরামচন্দ্র ও কল্কী। সংখ্যা ঠিক আছে, কিন্তু জয়দেবের তালিকা ও দোম আন্তোনিয়োর তালিকায় এক জায়গায় প্রভেদ দৃষ্ট হয়। প্রচলিত তালিকায় আছে—

“মৎস্যঃ কূর্ম্মো বরাহশ্চ নৃসিংহো বামনস্তথা।
রামো রামশ্চ রামশ্চ বুদ্ধঃ কল্কী চ তে দশ॥”

বামন জাতিতে ব্রাহ্মণ ছিলেন। তিনি যদি দোম আন্তোনিয়োর তালিকায় ব্রাহ্মণ বলিয়া উল্লিখিত হইয়া থাকেন তাহাতে মারাত্মক ভুল হয় নাই। কিন্তু আন্তোনিয়োর তালিকায় বুদ্ধের উল্লেখ নাই, উল্লেখ আছে কৃপের। সাধারণের বিশ্বাসমতে কৃপাচার্য্য অমর হইলেও শাস্ত্রমতে তিনি অবতারদিগের অন্যতম নহেন। তবে কূপের নাম কেমন করিয়া আন্তোনিয়োর তালিকায় আসিল? এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কঠিন নহে। “বনজৌ বনজৌ হ্রস্বঃ ত্রিরামাঃ সকৃপাকৃপৌ” বলিয়া দশাবতারের যে সংক্ষিপ্তপরিচয় দেওয়া হইয়াছে তাহা সম্ভবতঃ আন্তোনিয়োর জানা ছিল। খ্রীষ্টীয় সপ্তদশ শতাব্দীতে সাধারণ বাঙ্গালী বুদ্ধের কথা ভুলিয়া গিয়াছে। “সকৃপ” যে বুদ্ধ তাহা জানিবার ও বুঝিবার মত সংস্কৃত জ্ঞান আন্তোনিইয়োর ছিল না। কাজেই দশাবতার আলোচনা করিতে গিয়া তিনি বুদ্ধকে বাদ দিয়া কৃপের নাম করিয়াছেন। আন্তোনিয়ো বলিতেছেন,—শ্রীরাম ইন্দ্রজিৎকে বধ করিয়াছিলেন এবং লব ও কুশের সহিত যুদ্ধ করিয়াছিলেন। বলা বাহুল্য এখানেও জনশ্রুতি তাঁহার একমাত্র অবলম্বন। ব্রহ্মার সেবক ব্রহ্মদৈত্য হইবে এবং শিবের ভক্তগণ ভূত-পিশাচ হইবে ইহা আন্তোনিয়ো কোথায় পাইয়াছিলেন, জানি না। “ঊষাহরণে বিষ্ণু কৃষ্ণের নাতি অনিরুদ্ধকে বাঁচাইলেন রাজার সবংশে বধ করিয়া,” এই হইল আন্তোনিয়োর উক্তি। এ স্থলে তিনি কৃষ্ণ ও বিষ্ণুকে পৃথক্ মনে করিয়াছেন। কৃষ্ণ ও প্রদ্যুম্ন বাণকে পরাজিত করিয়া অনিরুদ্ধকে উদ্ধার করিয়াছিলেন, এখানে বিষ্ণু আসিলেন কেমন করিয়া? শঙ্খাসুর ও