পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বর্গ ও নরক।
৬১

অনেক সময় বিসর্জ্জন করিতে হইবে, কষ্টকে আদর পূর্ব্বক গ্রহণ করিতে হইবে। আমাদের যৌবন কালে সকল প্রবৃত্তিই সমুন্নত হয়। এই সময়ে আমাদের আমোদ-স্পৃহা, লোকানুরাগ, বিষয়-লালসা, সকলই প্রবল হইয়া উঠে। এই কলেই আমাদের ইচ্ছার সঙ্গে ধর্ম্মের সঙ্গে সর্ব্বদা বিরোধ উপস্থিত হয়। মনের ইচ্ছাকে চরিতার্থ করিলেই তাহাতে আমাদের সুখ; ধর্ম্মের অদেশে সেই সুখকে বিসর্জ্জন করিলে আত্ম-প্রসাদ থাকে। ধর্ম্মকে রক্ষা করিতে গেলে অনেক সময় বিষয়-সুখকে পরিত্যাগ করিতে হইবে; কিন্তু তাহাতে ধর্ম্ম-জনিত আনন্দ আরো অধিক উজ্জ্বল হইতে থাকিবে। নিঃস্বার্থ ধর্ম্ম কার্য্যের ফল আত্ম-প্রসাদ; ইন্দ্রিয়-মুখ ধর্ম্মের নিকট হইতে প্রার্থনা করা বৃথা।

 সুখ এবং আত্ম-প্রসাদ এই দুয়ের মধ্যে প্রভেদ নির্দ্দেশ করলে অনেক ভ্রম দূর হইতে পারে। কেহ কেহ বলেন, ঈশ্বরের রাজ্যে বিচার নাই; ধার্ম্মিকেরাই অধিক দুঃখী, পাপীরাই এ সংসারে সুখে আছে। হিতৈষণা, ন্যায়, সত্য অবলম্বন করিতে গেলেই ধনমান মর্য্যাদার হানি উপস্থিত হয়। অতএব সংসারে সুখে থাকিতে গেলে ধর্ম্ম রক্ষা কোন ক্রমেই হয় না।

 আমরা ধার্ম্মিক হইলে সংসারের সকল সুখ সম্পদ ভোগ করতে পাইব, ঈশ্বর আমাদের মঙ্গলের জন্যই এ রূপ বিধান করেন নাই। তিনি আমাদের সুখ তত চাহেন না, যত আমাদের ধর্ম্ম চাহেন। যদি ধার্মিক হইবামাত্র আমা-