পাতা:ভগ্নহৃদয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১১২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১০৬
ভগ্নহৃদয়।

অনিল।—(দূর হইতে দেখিয়া) 
না জানি কিসের জ্যোতি নয়নে আছে গো বালা!
যেদিকে চাহিয়া দেখ সেদিক করিছ আলা।
অন্ধকার-ভেদী এক হাসিময় তারা সম—
প্রাণের ভিতর পানে চাহিয়া রোয়েছ মম!
ফিরায়ে লইনু মুখ তবুও কেনগো দেখি
চাহিছে হৃদয় পানে দুটি হাসিমাখা আঁখি!
আঁখি মুদি, তবু কেন হেরিগো প্রাণের কাছে
দুটি আঁখি চেয়ে আছে এক দৃষ্টে চেয়ে আছে!
হেথা না পাইবি ঠাঁই—দূর হ’ তুইরে তারা—
চন্দ্রমা জোছনা করি এ হৃদি রেখেছে ভরি,
তুই তারা সে আলোকে হইবি আপনা-হারা!
দূর হ’রে—দূর হ’রে-দূর হ’রে ক্ষুদ্র তারা!
কিন্তু কি মধুর মুখ ভাব ভরে ঢল ঢল!
কোমল কুসুম সম সমীরণে টল মল।
দেখিনি এহেন মুখ সুমধুর ভাব ময়,
কেন? ললিতার মুখ এ হোতে কি ভাল নয়?
আহা সে মধুর বড় ললিতার মুখ খানি,
আঁখি কত কথা কয়, মুখেতে নাইক বাণী;—
বাহির হইতে চায় তার সেই মৃদু হাসি,
অধরের চারিধারে কতবার উঁকি মারে,
লজ্জায় মরিয়া যায় কেবল দুই পা আসি!
তার মুখ পূর্ণ-রাকা সরমের মেঘে ঢাকা,
মধুর মুখানি তার আমি বড় ভালবাসি!