ভাই কবি বলি তাই—ভাল মে বাসিতে নাই,
ভালবাসা মুরলারে সাজে কিগো কভু?
দূর হোক্-মুরলার কথা দূর হোক্—
মুরলার দুখজ্বালা মুরলার হোক্—
বল কবি গেছিলে কি নলিনীর কাছে?
নলিনীর কথা কিছু বলিবার আছে?
কবি।—সখিলো, বড়ই মনে পাইয়াছি ব্যথা!
কাল আমি সন্ধ্যাকালে গিয়েছিনু সেথা;
পথ পার্শ্বে সেই বনে নীরবে আপন মনে
দেখিতে ছিলাম একা বসি কতক্ষণ
সন্ধ্যার কপোল হোতে সুধীরে কেমন
মিলায়ে আসিতেছিল সরমের রাগ;
একটি উঠেছে তারা, বিপাশা হরষে হারা
ছায়া বুকে লোয়ে কত করিছে সোহাগ!
কতক্ষণ পথ চেয়ে রোয়েছি বসিয়া—
এমন সময়ে হেরি—সখীদের সঙ্গে করি
আসিছে নলিনী বালা হাসিয়া হাসিয়া;
নাচিয়া উঠিল মন হরষে উল্লাসে,
রহিনু অধীর হোয়ে মিলনের আশে।
কিন্তু নলিনীর কেন চরণ উঠেনা যেন,
দুই পা চলিয়া যেন পারে না চলিতে,
কেহ যেন তার তরে বোসে নাই আশা কোরে,
সে যেন কাহারো সাথে আসেনি মিলিতে!
কোন কাজ নাই তাই এসেছে খেলিতে!
পাতা:ভগ্নহৃদয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১২৩
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
চতুর্দ্দশ সর্গ।
১১৭