অবশেষে আপনি হলেম পরাভূত!
ইচ্ছা করে ছিঁড়ি ছিঁড়ি হৃদয় আমার
শকুনী গৃধিনীদের যোগাই আহার!
এহেন অসার, দীন, হৃদি অতি বলহীন,
যোগ্য শুধু শিশুর খেলেনা গড়িবার!
এ হৃদি কি বলবান পুরুষের মন—
সামান্য বহিলে বায়, সঘনে কাঁপিবে কায়
মাটিতে নোয়াবে মাথা লতার মতন!
কেন ধরা, কেন ওরে! জন্ম দিয়েছিলি মোরে?
এমন অসার লঘু দুর্ব্বল এ প্রাণ?
এখনি গো দ্বিধা হও, লও মোরে কোলে লও!
এ হীন জীবন-শিখা করগো নির্ব্বাণ!
আর একবার দেখি, যদি এ হৃদয়
পারি আমি বজ্রবলে করিবারে জয়!
কিন্তু হায় কে আমরা? ভাগ্যের খেলেনা,
প্রচণ্ড অদৃষ্ট স্রোতে ক্ষুদ্র তৃণ কণা!
অন্তরে দুর্দান্ত হৃদি পড়িছে উঠিছে,
বাহিরে চৌদিক হোতে ঝটিকা ছুটিছে;
যা কিছু ধরিতে চাই কিছুই খুঁজে না পাই,
স্রোতোমুখে ছুটিয়াছি বিদ্যুতের মত
দিগ্বিদিক হারাইয়া হোয়ে জ্ঞান হত।
চোখে না দেখিতে পাই, কানে না শুনিতে পাই,
তীব্রবেগে বহে বায়ু বধিরি শ্রবণ,
চারিদিকে টলমল—তরঙ্গের কোলাহল,
পাতা:ভগ্নহৃদয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১৪৮
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৪২
ভগ্নহৃদয়।