এই এক ধূলি-মুষ্টি কিনিয়া রাখিতে
সমস্ত জগৎ তোর চেয়েছিলি দিতে!
রাজ পথে মনের দোকান খুলিয়াছে—
রঙ্গ মাখাইয়া কত ঝুঁটা মন শত শত
সাজাইয়া রেখেছে সে দুয়ারের কাছে;
যে কোন পথিক আসে ডাকি তারে কয় পাশে,
হৃদয়ের ব্যবসায় করে সে রমণী—
আমারেও প্রতারণা কোরেছে এমনি!
যে মন কিনিয়াছিনু কিছুই সে নয়,
রঙ্গ-করা দুটা হাসি দুটা কথা-ময়!
প্রতি পিপাসিত আঁখি যে হাসি লুটিছে,
প্রতি শ্রবণের কাছে যে কথা ফুটিছে,
যে হাসির নাই বাস, নাই অন্তঃপুর,
চরণে যে বেঁধে রাখে মুখর নুপূর,
যে হাসি দিবস রাতি ভিক্ষার অঞ্জলি পাতি
প্রতি পথিকের কাছে নাচিয়া বেড়ায়,
অনিলরে! তারি তরে কেঁদেছিল হায়!
যে কথা, পথের ধারে পঙ্কের মতন,
জড়াইয়া ধরে প্রতি পান্থের চরণ,
সেই একটি কথা তরে হৃদয় আমার,
দিবানিশি ছিলি পোড়ে দুয়ারে তাহার!
হৃদয়ের হত্যা করা বার ব্যবসায়
সেই মহা পাপিষ্ঠার তুলনা কোথায়?
শরীর ত কিছু নয়, সে শুধু ধূলা—
পাতা:ভগ্নহৃদয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১৬১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
একবিংশ সর্গ।
১৫৫