পাতা:ভগ্নহৃদয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫৬
ভগ্নহৃদয়।

ধুলির মুষ্টির সাথে হয় তার তুলা,
সমস্ত জগৎ তুল্য হৃদয়ের পাশে
সাথ কোরে হেন হৃদি যেন বিনাশে—
তোর মাথা পরশিল তাহারি চরণ!
তারেই দেবতা বোলে করিলি বরণ!
তারি পদতলে তুই সঁপিলি হৃদয়—
তোর হৃদি—যার কাছে কিছুই সে নয়!
শতেক সহস্র হেন নলিনী আসুক্ কেন
মনের পথের তোর ধূলিও না হয়।
বিধাতা, এ সৃষ্টি তব সব বিড়ম্বনা,
সত্য বোলে যাহা কিছু পরশিতে গেছি পিছু
ছুঁয়েছি যেমনি আর কিছুই রহেনা!
হৃদে হৃদে ভালবাসা কোরেছ সঞ্চার
অথচ দাওনি লোক ভাল বাসিবার!
সমস্ত সংসার এই খুঁজিয়া দেখিলে
দুটি হৃদি এক রূপ কেন নাহি মিলে?
ওই যে ললিতা হেথা আসিছে আবার।
কোরেছে সমস্ত মুখ বিষন্ন আঁধার!
কেন? তার হোয়েছে কি ভেবেত না পাই
যা’ লাগি বিষণ্ন হোয়ে রোয়েছে সদাই!
চায় কি সে দিন রাত্রি বুকে তারে রাখি,
অবাক্ মুখেতে তার তাকাইয়া থাকি?
দিবানিশি বলি তারে শত শত বার
“ভাল বাসি—ভাল বাসি প্রেয়সী আমার!”