পাতা:ভগ্নহৃদয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৭০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৬৪
ভগ্নহৃদয়।

আমার হৃদয় মাঝে, একবার দেখে যাও!
দিবানিশি চায়, বালা, অধীর ব্যাকুল মন
ও হাসি-সমুদ্র মাঝে করে আত্ম বিসর্জন!
হেরি ওই হাসিময়, মধুময় মুখপানে
উন্মত্ত অধীর-হৃদি তিল দূর নাহি মানে;—
চায়, অতি কাছে গিয়া ওই হাত দুটি ধরি,
অচেতনে কাটাইয়া দেয় দিবা বিভাবরী;
একটি চেতনা শুধু জাগি রবে অনিবার—
সে চেতনা তুমি-ময়—ওই মিষ্ট হাসিময়—
ওই সুধা মুখ-ময়—কিছু—কিছু নহে আর!
আমার এ লঘু-পাখা কল্পনার মেঘগুলি
তোমার প্রতিমা, বালা, মাথায় লয়েছে তুলি;
তোমার চরণ-জ্যোতি পড়িয়া সে মেঘ পরে
শত শত ইন্দ্রধনু রচিয়াছে থরে থরে!
তোমার প্রতিমা লোয়ে কিরণে কিরণে ভরা
উড়েছে কল্পনা—কোথা ফেলিয়ে রেখেছে ধরা!
হরিত-আসন পরে নন্দন-বনের কাছে,
ফুল-বাস পান করি বসন্ত ঘুমায়ে আছে,
ঘুমন্ত সে বসন্তের কুসুমিত কোল পরে
তোমারে কল্পনা-রাণী বসায়েছে সমাদরে,
চারি দিকে জুঁই—ফুলচারি দিকে বেল ফুল,
ঘিরে ঘিরে রহিয়াছে অজস্র কুসুম কুল;
শাখা হোতে নুয়ে পোড়ে পরশিয়া এলো চুল
শতেক মালতী কলি হেসে হেসে ঢলাঢলি,