যদি কভু দেখিতাম মুহুর্ত্তের তরে
বিষাদ ছাইছে পাখা কবির অধরে,
হাসিয়া কত না হাসি—ঢালিয়া সঙ্গীত রাশি,
মৃদু অভিমান করি, মৃদু রোষ ভরে—
মৃদু হেসে, মৃদু কেঁদে—বাহুতে বাহুতে বেঁধে
দিতেম বিষাদ-ভার সব দুর কোরে!
কিন্তু আমি অভাগিনী ছেলেবেলা হোতে
এ গম্ভীর মুখে মম অন্ধকার ছায়া সম
রহিয়াছি সতত কবির সাথে সাথে!
আমি লতা গুরু-ভার মেলি শাখা অন্ধকার
হেন ঘন আলিঙ্গনে কোরেছি বেষ্টন,
উন্নত মাথায় তাঁর পড়িতে দিই না আর
চাঁদের হাসির আলো, রবির কিরণ!
হা মুরলা, মুরলারে—এমনি কোরেই হা রে
হারালি—হারালি বুঝি ভালবাসা ধন!
বুক, ফেটে যা’রে, অশ্রু কর্ বরিষণ,
কবি তোর অশ্রু-ধার দেখিতে পাবেনা আর,
যে কিরণে আছে ডুবি তাঁহার নয়ন!
দুর্ব্বল—দুর্ব্বল-হৃদি! আবার! আবার!
আবার ফেলিস তুই অশ্রু বারি—ধার?
আবার আবার কেন হৃদয় দুয়ারে হেন
পাষাণে পাষাণে গাঁথা—কে যেন হানিছে মাখা,
কে যেন উন্মাদ সম করে হাহাকার—
সমস্ত হৃদয়ময় ছুটিয়া আমার!
পাতা:ভগ্নহৃদয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৭৪
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৬৮
ভগ্নহৃদয়