পাতা:ভবঘুরের চিঠি - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভবঘুরের চিঠি ফাগুয়ার হল্লা আমার কানে ভেসে আসছে। কেষ্ট যে কেন এদেশের বসন্তোৎসবের নায়ক হয়ে দাড়িয়েছে, তা’ বেশ বুঝতে পারছি ; আর সঙ্গে সঙ্গে মনে হচ্ছে যে হিন্দুস্থানীদের আমরা খোট্টাই বলি আর মেড়েই বলি, তারা আমাদের চেয়ে ঢের বেশী পাকা হিন্দু। ওদের গড়নটা একটু মোটা তারের, আমাদের মতো সৌখীন ওরা নয় ; কিন্তু হিন্দুর সভ্যতা বলতে যা” বুঝি তা” ওদেরই মাঝখানে জন্মেছে; আর ওদেরই রক্তমাংসে তা’ পুষ্ট। তাই খাটি হিন্দুর আচার ব্যবহার ওদের মনকে যতটা নড়াচাড়া দেয়, বাঙ্গালীর মনকে ততটা দেয় না। আর একটু বেলা হলেই ওরা গা-ময় আবীর মেখে মাদল বাজাতে বাজাতে রাস্তায় বার হয়ে পড়বে ; আর উন্মত্তের মতো চীৎকার করতে থাকবে।--হোলি হৈ, হোলি হৈ ! আর আমরা তখন দোতলার জানালায় দাড়িয়ে বঁকা চোখে চশমা এটে মৃদু-মৃদু হাসবো। আর হয় তো ভাবতে থাকবে-এ পাগলের দল করে কি ! কিন্তু আজ মনে হচ্ছে যে, যে আনন্দ মানবজীবনের গোড়ার কথা, সেই আনন্দ থেকেই এই উন্মাদনার উৎপত্তি । যেদিন ভারতবর্ষের যৌবন ছিল, সেদিন এই আনন্দ-স্রোত মানবজীবনের দুকুল ভাসিয়ে প্রবাহিত হতো ; আর এই বসন্তোৎসবের সময়েই সেই জীবনস্রোতে বান ডাকতো । আমাদের কেষ্টঠাকুর এই জীবনানন্দের প্রতীক ছিলেন বলেই ক্ৰমশঃ তাকে আশ্রয় করেই এই উৎসব অনুষ্ঠিত »R