পাতা:ভবঘুরের চিঠি - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভবঘুরের চিঠি গড়াতে গড়াতে আরও পাঁচ-সাত হাত এগিয়ে গেল। যিনি ভজন গাইছিলেন তঁর ভক্তির উৎস একদম বন্ধ হয়ে গেল । “আরো রাম ” বলে। হুঙ্কার করেই তিনি পাশের কামরায় টপকে পড়লেন। সঙ্গে সঙ্গে হিন্দুস্থানীর দলও গাড়ী খালি কোরে যে যেদিকে পারলে অন্য গাড়ীতে পালালো । যে লোকটি গাড়ীর এক কোণে চুপ করে দাড়িয়েছিল তাকে জিজ্ঞাসা করলুম-“ব্যাপার কি ?” লোকটি কঁাদে কঁদে হয়ে বললে-“বাবাজী, আমি মাড়।” তখন মনে পড়ে গেল যে বোম্বাই অঞ্চলে মাড়েরা অস্পৃশ্য জাতি। তাই বেচারা গাড়ীতে উঠতেই সবাই আপনার জাত আর ধৰ্ম্ম বঁচিয়ে লাফাতে লাফাতে পালিয়ে গেল। কোথায় গির্ণার, কোথায় আবু পৰ্ব্বত ঘুরে ঘুরে ধাৰ্ম্মিকেরা যা কিছু পুণ্য সঞ্চয় করেছিলেন, আজ একটা অস্পৃশ্য মাড়ের সঙ্গে এক গাড়ীতে বসে তা’ তো আর নষ্ট করতে পারেন না । মাড় বেচারাটাকে টেনে নিয়ে আমার কাছে বসাতে দেখে ধাৰ্ম্মিকেরা আমার দিকে এমনি দৃষ্টিতে দেখতে লাগলেন যেন এইমাত্র আমি চিড়িয়াখানা থেকে শিকল ছিড়ে পালিয়ে এসেছি। সেদিন আমার চােখের সুমুখ থেকে একটা পৰ্দা সরে গেল। ছেলেবেলা ভারতবর্ষের ইতিহাস পড়ার সময় তৃতীয় পাণিপথের যুদ্ধের কাছে এসেই বিধাতার উপর আমার ভারি রাগ হতো। কেবলই মনে হতো, ওদিন পাঠানেরা না জিতে যদি মারাঠারা জিততো । আজ কিন্তু