পাতা:ভবঘুরের চিঠি - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভবঘুরের চিঠি । এলুম, তখন দেখলুম, সে ক্ষত্ৰিয়কুল একেবারে ধ্বংস হয়ে গেছে। মহানন্দ নামে একটা বুড়ো মড়া-খেকো রাজা মগধের সিংহাসনে বসে আফিম খেয়ে ঝিমোচ্ছে, আর রাজপ্ৰসাদসেবী ব্ৰাহ্মণের খুব টিকি দুলিয়ে দুলিয়ে যজ্ঞের ভস্মে ঘি ঢালছেন। সব ক’টার টিকি টেনে টেনে দেখলুম-আরে রামচন্দ্ৰ ! একেবারে পরচুলের সাজান টিকি। টান দিতেই খসে এলো। কেবল এক গোছা টিকি টানতে গিয়ে দেখলুম। -হাঁ, টিকির মত টিকি বটে ; একেবারে মগজ থেকে বেরিয়েছে। টিকিধারীকে জিজ্ঞাসা করলুম-পণ্ডিতজীর নাম ? ব্রাহ্মণ আমার আপাদমস্তক, তীব্র দৃষ্টিতে দেখে বললেন-কৌটিল্য। সে রকম তীক্ষ্মদৃষ্টি ভারতবর্ষে আর বেশী দেখেছি বলে মনে হয় না । হা, একটি মানুষের মতো মানুষ বটে ! নমস্কার করে তঁাকে জিজ্ঞাসা করলুম-কি পণ্ডিতজী, বাৰ্ত্তা কি ? কৌটিল্য বললেন-বাৰ্ত্তা এই যে, যারা ক্ষত্ৰিয়ত্ব হারিয়েও নিজেদের ক্ষত্ৰিয় বলে পরিচয় দেয়, তারাই এখন ভারতের রাজা । আমি বললাম-বাটে ! কি আশ্চৰ্য্য ! কৌটিল্য খুব চালাক লোক। কথাটি শুনে বোধ হয় আমাকে চিনতে পেরেছিলেন। বললেন—আশ্চৰ্য্য বৈকি! যাদের চারিদিকে আগুন জ্বলে উঠছে, সিংহাসন যাদের টলছে, তারাও চিরদিন লোকের বুকে বসে দাড়ি ওপড়াবার স্বপ্ন দেখছে। ভাবছে, তাদের রাজ্য চিরস্থায়ী । , ԵՀ