পাতা:ভবঘুরের চিঠি - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভবঘুরের চিঠি শাস্ত্ৰবাক্য প্ৰমাণ করে একেবারে দেখতে দেখতে চোখের সামনে শূন্যে মিলিয়ে যাওয়া ; অন্ততঃ লজ্জায় অধোবদন হয়ে থাকা। কিন্তু বেহায়া জগৎটার মধ্যে সে-রকম শুভবুদ্ধি কিছু দেখা গেল না। সে চিরদিন অনন্ত মহাকাশ জুড়ে আপনার উন্মত্ত আনন্দে যে রকম নেচে আসছিল, তেমনি নাচতে লাগিল । জ্ঞানীদের রাশি রাশি বচনের দিকে ভ্ৰক্ষেপও করলে না । জ্ঞানীরা তখন চটে গিয়ে ব্যবস্থা দিলেন-“এ সংসার যখন আমাদের কথা শোনে না, তখন আর এর মুখ দর্শন করা হবে না ; চলো সবাই মিলে বনে गांठे।” কিন্তু হায়রে! বনে গিয়েও কি সুস্থির হয়ে দু’দণ্ড বৈরাগ্য-চৰ্চা করে জুড়োবার জো আছে ? প্রথমতঃ, দিনের বেলা দু’টি রাধা-ভাত পাওয়া মুস্কিল, দ্বিতীয়তঃ, রাত্রে মশা কামড়ায়। জ্ঞানীদের মধ্যে র্যারা মহাজ্ঞানী, তারা তাই বন থেকে পালিয়ে পাহাড়-পর্বতে গুহার মধ্যে ঢুকে নাকে-কানে তুলো গুজে একেবারে সমাধিস্থ হবার যোগাড় করলেন। এখনও যদি নৰ্ম্মাদার তীরে ঘুরতে যাও, তো তাদের দু’-দশ জন বংশধরের সঙ্গে যে সাক্ষাৎ না হয়, তা’ নয় । তঁরা তো সমাধিস্থ হলেন, ভাবলেন প্ৰকৃতিকে ফাকি দিয়ে ব্ৰহ্মপুরুষকে নিয়ে দিন কাটাবেন। কিন্তু প্ৰকৃতিকে ছেড়ে তাদের যদি বা চলে, ব্ৰহ্মপুরুষের যে চলে না। জগৎ সৃষ্টি যে তার নিত্যকৰ্ম্ম । “নিত্যৈবসা জগন্ম খ্রিঃ।”