পাতা:ভবঘুরের চিঠি - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভবঘুরের চিঠি আমাদের দেশের বৈদান্তিক পণ্ডিতেরা কৰ্ম্মের সঙ্গে জ্ঞানের যে বিরোধ বাধিয়ে বসে আছেন, তার মূল কথাটা এই যে, ব্ৰহ্মই নিত্য, আর সংসার অনিত্য। সুতরাং ব্ৰহ্ম-জ্ঞান লাভ করার সঙ্গে সঙ্গেই সংসারের কৰ্ম্ম খসে পড়বেই । কিন্তু যত বড় ব্ৰহ্মজ্ঞানীই হোন না কেন, তাকে সকাল সন্ধ্যা দু’টি ডাল-ভাত, না হয় “শুখা-চাপাটি’ খেতেই হবে । তিনি কৰ্ম্ম ছাড়লে হবে কি, কৰ্ম্ম তো তাকে ছাড়ে না। আর কাজ যখন বাস্তবিকই খসে পড়ে না, তখন স্বীকার করতেই হবে। যে, যেখান থেকে জ্ঞানের উৎপত্তি, সেই ভগবানের মধ্যেই কৰ্ম্মের বীজ নিহিত। “কৰ্ম্ম ব্ৰহ্মোপ্তবং বিদ্ধি।” “যতঃ প্ৰবৃত্তিঃ প্ৰসৃতা পুরাণী।” যা-থেকে প্রবৃত্তির উৎপত্তি, তাকে স্না ছাড়লে কৰ্ম্মও ছাড়া র্যায় না। জ্ঞানলাভের পর জীব যখন মুক্ত হয়, তখন তার স্বাতন্ত্র্যবোধের সঙ্গে অহঙ্কারের কৰ্ম্ম ঘুচে যায়, কিন্তু ভগবানের শক্তি , তখন, তাকে আশ্ৰয় করে, কৰ্ম্ম, রূপে বাইরে ফুটে উঠে। এই ভাবটাই তন্ত্রের ভুক্তি-মুক্তিবাদে প্রচার করা হয়েছে। সৌভাগ্যক্রমে বাংলাদেশের সাধক-সমাজে শঙ্কার-মতের প্ৰতিষ্ঠা কখনও ভাল করে হয় নি। এমন শস্য-শ্যামলা সোনার দেশে প্রকৃতির পূজা না হওয়াই অস্বাভাবিক। ভগবান যে শুধু নিগুণ আর নিরাকার, এ কথা স্বীকার করতে বাঙ্গালীর প্রাণ কেঁদে উঠে । পুরীতে বাসুদেব সার্বভৌম যখন অনেক দিন ধরে বেদান্তের টীকা-টিপ্পানি w