একটা আধুনিক জাতির সৃষ্টি হয়। ভারতের জাতীয়ভার সৌধকে ও এই শ্রেণীর ঐক্যের উপর প্রতিষ্ঠিত করতে হ’বে। অবশ্য রাষ্ট্রগঠনের বেলায় সীমান্ত-রক্ষা-ব্যবস্থার কথা ও মনে রাখা চাই।
রাষ্ট্রপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা যে অনেক সময়ে ব্যর্থ হয়, প্রাচীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠান যে অনেক সময়ে অন্তর্বিপ্লব্যবশতঃ আপনা থেকেই ভেঙ্গে পড়ে, তার কারণ কি? একটু অনুসন্ধান করলেই দেখতে পাই, ঐক্যের যে সূত্রগুলি আমরা উল্লেখ করেছি, তাদের সবগুলির কিম্বা কতকগুলির অভাব হয়েছিল। বলেই সেরূপ ঘটেছে; ঐক্যের স্থানে তাই অনৈক্য এসে দেখা দিয়েছে, মৈত্রীর স্থানে দ্বন্দ্ব এসে দেখা দিয়েছে, সহযোগের স্থানে অসহযোগ এসে দেখা দিয়েছে, আর তার ফলে রাষ্ট্র-সৌধ ভেঙ্গে চুরমার হ’য়ে গিয়েছে।
প্রথম মহাসমরের পূর্ব্বেকার অষ্ট্রীয়ান-সাম্রাজ্য পৃথিবীর অন্যতম প্রবল প্রতাপশালী’ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠান রূপেই গণ্য ক’ত? অথচ পরীক্ষার বেলায় সে সাম্রাজ্য টিকল না; ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিভক্ত হয়ে গেল। তুরস্ক- সাম্রাজ্যের ও সেই দশা ঘটিল। সেই একই পরীক্ষায় জর্ন্মাণ রাষ্ট্র কিন্তু টিকে রইল। অষ্ট্রীয়ান এবং তুরস্ক সাম্রাজ্যদ্বয়ের আভ্যন্তরীণ জীবনে সেই কৃষ্টিগত, ভাষাগত, স্বার্থগত এবং আদর্শগত ঐক্য ছিল না, যা’ সঙ্কটের সময়ে তাদের বাঁচাতে পারত! জার্ম্মাণ সাম্রাজ্যে সে ঐক্য প্রভূত পরিমাণেই ছিল। জার্ম্মাণী তাই টিকে থাকল।
আমাদের দেশের ইতিহাস খুললে দেখতে পাই, অর্থ ও ভাবতীয় সামাজ্যের অস্তিত্ব কেন্দ্রীয় শক্তির বাহুবলের প্রাচূযোর উপরেই নির্ভর করছে। জাতির অন্তরের ঐক্যের উপরে নির্ভর করেনি। কেন্দ্রীয় শক্তিতে যখনই বাহুবলের অভাব ঘটেছে, অন্তরের ঐক্যের অভাবে দেশ তখনই বিভিন্ন খণ্ড-রাষ্ট্রেে বিভক্ত হ’য়ে গিয়েছে। যে অন্তরের ঐক্যের উপরে একটি রাজ্যের স্থায়িত্ব নির্ভর করে, সে ঐক্য অখণ্ড