GG ভবিষ্যতের বাঙালী সৰ্ব্বদাই বৃহত্তর সামাজিক স্বার্থের সঙ্গে কলহে রত থাকে। এই শ্রেণীর লোক তাদের মনের ক্ষুদ্রতা এবং স্বার্থপরতাকে সাম্প্রদায়িক আকার দিয়ে দেশের ভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকদের সঙ্গে কলহ করে, আর বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিদ্বেষ ও মনোমালিন্যের সৃষ্টি করে। এই শ্রেণীর লোকই হিন্দু-মুসলমানবিরোধের জন্য প্ৰধানতঃ দায়ী। হিন্দু সাম্প্রদায়িকতাবাদীরা হিন্দু রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখে আর মুসলমান সাম্প্রদায়িকতাবাদীরা মুসলিম রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখে। উভয় স্বপ্নই যে আকাশ-কুসুমের মত অলীক, সে কথা তারা বোঝে না, বুঝতে চায় না। এরং বোঝাবার শক্তিও তার হারিয়ে ফেলেছে । অজ্ঞ জনসাধারণ তাদের কথা শুনে ক্ষিপ্ত হ’য়ে উঠে ; আর তার ফলস্বরূপ দেখা দেয় সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ আর কলহ, মারামারি, কাটাকাটি আর খুনোখুনি! সাহিত্যিকের কাজ হ’চ্ছে---উদার সাৰ্বজনীন মনোড়াবের স্বষ্টি করা। সাধনার সাহায্যে নিজেদের মধ্যে উদার মনোভাবের সৃষ্টি করতে হ’বে, আর সেই উদার মনোভাব সাহিতে প্ৰকাশ করতে হ’বে । তারা যদি তা’ করতে পারেন, তা’ হ’লে তঁদের সাহিত্যসাধনা সার্থক হ’বে ; আর তাদের সৃষ্ট সাহিত্যের সাহায্যে তঁার দেশের প্রভূত কল্যাণ সাধন করতে পারবেন । তবে একথা মনে রাখতে হ’বে যে, কেবল কথার উদারতায় প্রকৃত কাজ হ’বে না ; মানুষের সঙ্গে ব্যবহারে, দৈনন্দিন জীবনযাত্রাতে, অভ্যাস-অনুশীলনে সেই উদারতা দেখাতে হ’বে । ভিন্নধৰ্ম্মাবলম্বী মহাপুরুষদের সম্মান করতে হ’বে, তাদের আদর্শের, তাদের সাধনাকে শ্রদ্ধা দেখাতে হ’বে, তাদের জীবনে এবং সাধনায় যা’ কিছু প্ৰশংসাৰ্ছ ‘মুক্তকণ্ঠে সে সব স্বীকার করতে হবে। তারপর পর-ধৰ্ম্মের প্রতি, ভিন্ন জাতির প্রতি অসংযত আক্রমণ যাতে বিচারালয়ে দণ্ডনীয় হয়, তার জন্য দেশব্যাপী আলোচনা ও আন্দোলন চালাতে হ’বে । আর র্যারা এই সব
পাতা:ভবিষ্যতের বাঙালী.djvu/৫৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।