ভবিষ্যতের বাঙালী o বনিয়াদের উপর যে ভবিষ্য বাঙালী জাতির প্রতিষ্ঠা হ’বে, তার গৌরবচ্ছটা বৰ্ত্তমানের কাল মেঘের অবকাশপথে আমার দৃষ্টিকে যেন উদ্ভাসিত ক’রে তুলছে। মুক্তির পথ বিগত সেন্সাস নিয়ে হিন্দু মুসলমানের মধ্যে যথেষ্ট মন কষাকষি দেখা দিয়েছিল। হিন্দু-মুসলমানের উপর অন্যায় সংখ্যাবৃদ্ধির অভিযোগ এনেছেন, আর মুসলমান হিন্দুর উপর অন্যায় সংখ্যাবৃদ্ধির অভিযোগ এনেছেন ; আর উভয় সমাজের নেতৃস্থানীয়েরা এমন সব অভিশাপের কথা বলছেন, যা’ শুনে প্রত্যেক ভদ্রলোকেরই মাথা হেঁট হয়। মনে স্বতঃই প্রশ্ন ওঠে, আমরা কি সত্যই আত্মনিয়ন্ত্রণশীল হবার যোগ্য ? এ সম্বন্ধে কোন কোন সংবাদপত্রাদির মন্তব্য পড়ে মনে হয়েছিল, হিন্দু চান মুসলমানের সংখ্যা কমুক, আর মুসলমান চান হিন্দুর সংখ্যা কমুক । এ মনোবৃত্তি জাতীয়তার আদর্শকে নিশ্চয়ই আগিয়ে নিয়ে যাবে না। লজ এবং পরিতাপের বিষয় এই যে, তথাকথিত নেতৃস্থানীয়েরা জনসাধারণকে উচ্চতর আদর্শের সন্ধান দেওয়া তো দূরের কথা, তারা এমন সব মন্তব্য প্ৰকাশ করেছেন, যার ফলে হিন্দু জনসাধারণ মুসলমানদের মরণ কামনা করেছে, আর মুসলমান জনসাধারণ হিন্দুদের মরণ কামনা করেছে । বিষের ধারা তো চারিদিক থেকেই আমাদের জীবনে এসে পড়ছে! এই সেন্সাস-সমস্যা তাতে নূতন এক উৎকট বিষের যোগ করেছে । যারা হিন্দু-মুসলমানের মিলন চান এবং উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতির ভাব প্রতিষ্ঠিত দেখতে চান, তাদের জন্য এই সেন্সাসবিভ্ৰাটু নূতন এক সমস্যার আমদানি করেছে। তঁদের তরফ থেকে কি এই সমস্যার উপর নূতন আলোকপাত করা যায় না ?
পাতা:ভবিষ্যতের বাঙালী.djvu/৭৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।